আলোচনায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ” ত্রিপুরা রাজ্য এডস কন্ট্রোল সোসাইটি নিয়মিতভাবে এডস-এর বিরুদ্ধে কাজ করছে। আমরা সবাই জানি শরীরে একবার এইচআইভি সংক্রমণ হলে সেটা নির্মূল করার কোনও উপায় নেই, ওষুধ নেই। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় ভাইরাল লোড কমিয়ে রাখা যায়। এতে যিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। এডস সম্পর্কে জন-সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করছে ত্রিপুরা এডস কন্ট্রোল সোসাইটি। তাদের সার্বিক কাজের নিরিখে জাতীয় এডস কন্ট্রোল সোসাইটির জাতীয় স্তরের পর্যালোচনায় ত্রিপুরা ‘গুড পারফর্মিং স্টেট’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে এবং পুরস্কৃত হয়েছে।”
advertisement
মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা জানান, ” সারা বিশ্বে এইচআইভি সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এর মধ্যে ভারতে এই সংখ্যা প্রায় ২৫.৪৪ লাখ। এইচআইভি সংক্রমণ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য এই কার্যক্রমের আয়োজন। এর আগেও এই বিষবে একাধিকবার নানা কার্যক্রম করা হয়েছে। আগে রেড রিবন ক্লাব শুধু কলেজ স্তরে ছিল। এ’জন্য আমি স্কুল স্তরে রেড রিবন ক্লাব করার জন্য এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির কাছে আহ্বান রাখি।”
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ” ভোগবাদের দুনিয়ায় মানসিক ব্যাধি-সহ নানা জটিলতার কারণে যুব সমাজ এখন নেশার দিকে প্রভাবিত হচ্ছে। ড্রাগসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে কাজ করছে সরকারের বিভিন্ন নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি। কিছুদিন আগে প্রচুর পরিমাণে নেশাদ্রব্য ধ্বংস করা হয়েছে। শুধু ধরপাকড়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। ড্রাগের শিকার যে-সব ছেলেমেয়ে, তাদের সতর্ক করাও প্রয়োজন। এই দিশায় কাজ করছে সরকার।” তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ” আমাদের মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩%। যারা যুব গোষ্ঠী। এরমধ্যে ৩৯% রয়েছে মেয়েরা।”
অনুষ্ঠানে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ক্লাসে উচ্ছৃঙ্খল ছেলেমেয়ে থাকলে তাদের প্রতি নজর রাখতে হবে। সেই সঙ্গে ক্লাসে কারও অনুপস্থিতির দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে অভিভাবকদের ডেকে জিজ্ঞেস করতে হবে। এইচআইভি/এডস মোকাবিলায় আরও স্ক্রিনিং বৃদ্ধি করতে হবে। যত স্ক্রিনিং করা যাবে, ততই চিহ্নিত করা যাবে। এসব বিষয় নিয়ে সচেতনতার জন্য স্কুল কলেজে আরও আলোচনার দরকার। শিক্ষক শিক্ষিকাদেরও ক্লাশে অন্তত ৫ মিনিট এ’বিষয়ে আলোচনা করা দরকার। ক্লাব, সামাজিক সংস্থাগুলিকেও আরো এগিয়ে আসতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ” বর্তমানে বিশ্বে এডস-এ মৃত্যুর সংখ্যা অনেক হ্রাস পেয়েছে। ভারতবর্ষেও সেটা হ্রাস পেয়েছে। আরও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার প্রয়োজন রয়েছে। ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ত্রিপুরায় মোট এইডস আক্রান্তের সংখ্যা ৬,৪১৭ জন। এরমধ্যে মহিলা ১,২২২ জন। পুরুষ ৫,১৮৯ জন ও ট্রান্সজেন্ডার ৬ জন। এডস আক্রান্তদের ২,০০০ টাকা করে ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে সরকার। ”
