তিনি আরও বলেন, "আমার কথা মিলিয়ে নেবেন, কংগ্রেসের ভোট যেটা চলে গিয়েছিল, সেটা আবার ফেরত আসবে। আমার দৃঢ বিশ্বাস বিজেপি এই রাজ্যের ভোটে সিঙ্গল ডিজিট অতিক্রম করতে পারবে না। যদি না সাংঘাতিক কোনও ম্যালিপুলেশন হয়। তিপ্রামোথার অবশ্যই নিজের আসন আছে। তারা সেখানে শক্তিশালী অবশ্যই। বিজেপিকে দেখুন তো, ওরা পাঁচটি আসনের নাম করতে পারে কিনা! ওদের আসন একেক নেতা একেক রকম বলবেন। আমার বিজেপিতে যাওয়ায় ভুল হয়নি। মানুষের চাহিদা, মানুষের চাপ ছিল। মানুষ একঘেয়েমি কাটাতে চেয়েছিল। আমি তাই গিয়েছিলাম।"
advertisement
তিনি বলেন, "আমি যদিও বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেছি, সেই দলের সদস্য হয়েও। বিজেপির সুনীল দেওধর আবার এখানে মিসড কল বাবা হয়ে গেছেন। বিপ্লব দেবকে মিস করছি। কারণ উনি এন্টানটেনার। এখানে বাচ্চারা আর কার্টুন দেখে না। এখানে বিপ্লব দেবের কথা দেখে আর শোনে, আর হাসে। আমি মনে করেছিলাম আগে জোট হওয়া উচিত ছিল না। তবে আমি এখন খুশি। গোটা দেশে বিজেপির হাত থেকে গণতন্ত্র বাঁচাতে হবে। আমাদের রাজ্যে যেখানে সংবিধান ভেঙে পড়েছে সেটাকে এই জোট পুনরুদ্ধার করতে পারবে।"
কংগ্রেস নেতা বলেন, "মজার ব্যাপার হল, বামেদের ও কংগ্রেসের উভয়ের নিচু তলা থেকে চাপ ছিল, আমাদের এক হতে হবে। একা একা লড়াই করা যাবে না। এখানে নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে একটা মিল আছে। যেটা পশ্চিমবাংলার ঠিক উলটো। আমি কখনও কমপ্রোমাইজ করিনি। আসলে রাজনীতি আমার সংসার চালায় না। আমার একটাই খারাপ স্বভাব আছে। আমার ধূমপান করার অভ্যাস আছে৷ আমার ইডি, সিবিআই, আয়কর নিয়ে ভয় নেই। আমার কী করবেন নরেন্দ্র মোদী? অনেকেই টিকে আছে দূর্নীতিতে, অর্থে। তারাই সেই কারণে চলে গেছে। আমরা এই জন্যেই জানিয়েছি ত্রিপুরায় লোকায়ুক্ত আইন অনেক শক্তিশালী করতে হবে।"
তিনি বলেন, "আমরা দূর্নীতি বন্ধ করতে চাইছি। বিজেপিতে গিয়েছিলাম কারণ, সেই সময় এই রাজ্যের সরকার কারও কথায় কর্ণপাত করত না। তাই মানুষের চাপে যেতে বাধ্য হয়েছি। আসলে আমরা চোর তাড়াতে ডাকাতকে ডেকে এনেছিলাম। মানুষ একঘেয়েমি সরকার কাটাতে চেয়েছিল। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব আমাদের ওপর আস্থা রাখে। ওরা মনে করে ত্রিপুরা ইউনিট যথেষ্ট কাজ করে। তবে হাতে সময় আছে, রাহুল গান্ধি ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধি আসতে পারেন। আমি ভেবেছিলাম তৃণমূল আসলে বামেদের হারাতে পারবে।"
সুদীপ রায় বর্মন বলেন, "২০১৭ সালের এপ্রিলে গিয়েছিলাম কালিঘাটে। দিদি বলেছিল, শোন আমার হাতে সময় নেই। তোঁদের দেখে নেবে বলে এক নেতার নাম বলেছিলেন। উনি এই রাজ্য নিয়ে সিরিয়াসনেস দেখাননি। তাই থাকিনি। কেন অন্য রাজ্যে তারা সংগঠন তৈরি করতে পারেনি। আমি ত্রিপুরার পুরভোটে তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাতে নয়, আমি গণতন্ত্রকে বাঁচাতে নেমেছিলাম। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বলার অভিপ্রায় নেই। আমি বিজেপি করলেও আমি রাহুল-সনিয়া-প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে কথা বলিনি।"
আরও পড়ুন, 'ধনপুর কি নিজের মেয়েকেই চায়?' উত্তর খুঁজছে ত্রিপুরা
আরও পড়ুন, দাঁতের ডাক্তার, তুখোড় ব্যাডমিন্টনে! ত্রিপুরায় বিজেপির মূল ভরসা মানিকই
সুদীপ বলেন, "আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোট ভাইয়ের মতো। তার সঙ্গে রাজনীতি করেছি। একদিন হলেও ওই দলটা করেছি। তবে আমার মতো দলবদলুকে নিতে ওরা প্রস্তুত হচ্ছিল। তবে আমি দিদির বিরুদ্ধে কোন কথা বলব না। তিপ্রামোথা যদি ১০-১২ আসনে জিতে যান তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। ভবিষ্যতে বিজেপিকে হারাতে প্রদ্যোতকে সঙ্গে নিতে আমাদের আপত্তি নেই৷ ওদের কিছু রাজনৈতিক ডিমান্ড আছে। সেটা কোনওভাবেই অসংবিধানিক নয়।"