উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার আদালতে শুনানির শেষ দিন শায়রা বানুর আইনজীবী প্রবীণ অ্যাডভোকেট অমিত চাড্ডা অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের উদ্দেশ্যে বলেন, তিন তালাক প্রথা যে একটি অপরাধ, তা মেনে নেওয়া উচিত ৷ এটিই ছিল কপিল সিব্বলের সওয়ালের জবাব ৷
মঙ্গলবার তিন তালাক প্রথার পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে কপিল সিব্বল জানান, ‘১৪০০ সাল থেকে এই পরম্পরা চলে আসছে ৷ ‘এখন একে কীভাবে ইসলামবিরোধী বলা যায় ৷’ অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের পক্ষ থেকে মামলাটি লড়ছেন কপিল সিব্বল।
advertisement
কয়েকশো বছর ধরে তিন তালাক প্রথা চলে আসছে ৷ আজ তাহলে সেটি অসাংবিধআনিক হয়ে গেল কীভাবে ৷ পাশাপাশি রামমন্দির ইস্যুটি টেনে এনে বলেন অযোধ্যা রামের জন্মভূমি ৷ এটা হিন্দুদের বিশ্বাস ৷ তা নিয়ে যখন কোনও প্রশ্ন তোলা হয়নি ৷ তাহলে মুলিমদের বিশ্বাস নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে ?
তিনি বলে ৬৩৭ সাল থেকে তিন তালাক প্রথা চলে আসছে ৷ সেই প্রথাকে ইসলামবিরোধী বলার আমরা কে? এটা মানুষের বিশ্বাস ৷ তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়না ৷ কপিল সিব্বল আরও জানান, মহম্মদের সময়ের পর থেকেই তিন তালাক প্রথা চালু হয়েছে এবং এই প্রথার উল্লেখ ‘হাদিশ’-এও রয়েছে।
এরপরই অবশ্য পাল্টা প্রশ্ন উঠে যে ই-তালাক বা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে তিন তালাকের কথাও সেখানে বলা রয়েছে ৷
সোমবারই কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তিন তালাক সহ সব ধরনের ডিভোর্স আদালতে বাতিল হয়ে গেলে মুসলিমদের বিয়ে, বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন আনা হবে।
মুসলিম শরিয়ত আইনের ‘তিন তালাক’ বিধি ও ইউনিফর্ম সিভিল কোড নিয়ে দ্বন্দ্ব ও বিতর্ক বহু পুরনো ৷ শরিয়ত কানুন বিশেষজ্ঞদের মতে, শরিয়ত আইনের তালাক বিধি একটি সামাজিক ব্যবস্থা, যাকে সংবিধান ও আইন বৈধতা দিয়েছে ৷ কিন্তু এতে মুসলিম মহিলাদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে বলে বহুদিন ধরেই এমন দাবি উঠছে ৷
সংবিধানের ২৫-এর ক ধারা মানলে তিন তালাকের ব্যবহার মুসলিম নারীর অধিকার, সম্মান এবং আত্মমর্যাদার উপর আঘাত। এই বিষয়টি সামনে রেখেই তিন তালাক নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে শীর্ষ আদালতে পাঁচটি রিট পিটিশন দাখিল হয়। তিন তালাক অসাংবিধানিক বলে ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছে কেন্দ্রের আইনজীবী।