মঙ্গলবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতের ইস্তফাপত্র পেশের পরে বুধবার সকালে দেরাদুনে রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে বৈঠকে বসেন বিধায়করা। ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক, অজয় ভাট, তিরথ সিং-সহ একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব। নিশাঙ্ক এবং উত্তরাখণ্ডের মন্ত্রী ধন সিং রাওয়াত মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাঁদের ভাগ্যে শিঁকে ছেড়েনি।
আলোচনা শেষে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিরথের নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সর্বভারতীয় সভাপতিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। যাঁরা ছোটো একটি গ্রাম থেকে উঠে আসা দলের একজন সামান্য কর্মীর উপর ভরসা রেখেছেন। আমি কখনও কল্পনা করতে পারিনি যে আমি এখানে পৌঁছতে পারব। সব মানুষের আশা পূরণের চেষ্টা করব এবং গত চার বছর যে কাজ হয়েছে, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
advertisement
প্রসঙ্গত ‘সরকার চালানোর পদ্ধতি’ নিয়ে নিজের দলেরই একটি অংশের বিধায়কদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন প্রাক্তন ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ের পর মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসীন হন ত্রিবেন্দ্র। কিন্তু সম্প্রতি দলেই বিরোধের মুখে পড়েন তিনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি ভিত্তিতে বিজেপির কোর কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন উত্তরাখণ্ডের বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত গৌতম এবং ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংয়ের মতো কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। তাতে যোগ দিয়েছিলেন ত্রিবেন্দ্র।
সেই বৈঠকের পর দিল্লিতে ছুটেছিলেন ত্রিবেন্দ্র। সেখানে বিজেপিরর সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সেইমতো মঙ্গলবার বিকেলে রাজ্যপাল বেবি রানি মৌর্যের সঙ্গে দেখা করে ইস্তফা দেন ত্রিবেন্দ্র।
এদিকে তামিলনাড়ুতে নির্বাচনের ঠিক আগে এনডিএ ছেড়ে দিয়েছে বিজেপির অন্যতম জোটসঙ্গী চিত্রতারকা বিজয়কান্তের দল ডিএমডিকে। তার আগে অসমে গেরুয়া শিবির ছেড়ে কংগ্রেসের মহাজোটে শামিল হয়েছে বোরোল্যান্ড পিপল’স ফ্রন্ট (বিপিএফ)। ফলে তামিলনাড়ু এবং হরিয়ানাতেও শরিকি চাপে সঙ্কট বেড়েছে বিজেপির। সবমিলিয়ে উত্তরাখণ্ড থেকে হরিয়ানা, মসনদ রক্ষা নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে পদ্ম–শিবিরের।
যদিও এই বিষয়ে দলের বিধায়ক তথা মুখপাত্র মুন্না চৌহান বলেন, ‘এটা একেবারেই ভুল ভাবনা যে, দল এমন কোনও কারণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছে। বিরোধীরা পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ তোলেনি। আমার মনে হয় দল তাঁর বৃহৎ নেতৃত্বকে জাতীয় স্তরে কাজে লাগাবে বলে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে।’ কিন্তু এই সাফাই অনেকেই মানতে নারাজ। কারণ আপনাকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ কী? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "দিল্লির নেতাদেরই জিজ্ঞাসা করুন এর কারণ কী!"