এদিন শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি এনভি রামন, বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনজীবীদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি, মৃত এক যুব কৃষক লাভপ্রীতের মা গুরুতর অসুস্থ। অবিলম্বে তাঁর চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে রাজ্য সরকারকে। একইসঙ্গে স্টেটাস রিপোর্টে রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে ((Supreme Court on Lakhimpur Violence), ৪ কৃষক-সহ মৃত ৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। পুরো ঘটনায় অভিযুক্ত কারা? অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কতগুলি এফআইআর দায়ের হয়েছে ? কতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ?
advertisement
উল্লেখ্য, অভিযোগ ওঠে গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলার তিকুনিয়ায় আন্দোলনরত ৪ কৃষকের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশিস মিশ্র। ওই ঘটনায় ৪ কৃষকের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর অশান্তির জেরে স্থানীয় দুই বিজেপি কর্মী, এক গাড়ির চালক এবং এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়।পুরো ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ও প্রশাসনের অকর্মণ্যতা ও ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্য সরকার মৃতদের পরিবার পিছু ৪৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেও সরকারের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠে নানা মহলে।
আরও পড়ুন-বিধায়ক হিসেবে শপথ নিলেন মমতা, আর তারপরেই ক্লাইম্যাক্স বিধানসভায়!
এই ঘটনার পরেই শীর্ষ আদালতে দুই আইনজীবী শিবকুমার ত্রিপাঠী এবং সিএস পান্ডা প্রধান বিচারপতি এনভি রামনকে চিঠি লিখেছিলেন। এদিন শুনানির আগেই আইনজীবীদের এজলাসে ডেকে পাঠান প্রধান বিচারপতি। এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করতে বলেছিল। কিন্তু রেজিস্ট্রারের দপ্তর স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে। যদিও তাতেও কোনও সমস্যা নেই। শুরুতেই আইনজীবী শিবকুমার ত্রিপাঠী বলেন, উত্তরপ্রদেশ সরকার সময় মতো কোনও পদক্ষেপ করেনি। লখিমপুর খেরিতে ভীষণভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি এম ভি রমন উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে জানতে চান এখনও পর্যন্ত কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার ?
আদালতে উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী গরিমা প্রসাদ জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছে। আগামিকাল হলফনামা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে বিস্তারিত জানাবে রাজ্য সরকার। এরপরেই উত্তরপ্রদেশ সরকারকে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। স্ট্যাটাস রিপোর্টে বলতে হবে, এখনও পর্যন্ত কত জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে এবং কতজন গ্রেফতার হয়েছে। আগামীকাল ফের শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য লখিমপুর খেরির ঘটনায় (Lakhimpur Violence) দেশজুড়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চরমে উঠেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্র টেনি তাঁর ছেলেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। রাজ্য সরকার মৃতদের পরিবারকে ৪৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এমনকি এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের পর বুধবার রাতে লখিমপুর খেরিতে পৌঁছন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী-সহ দলের প্রতিনিধিরা। কংগ্রেসের তরফে নিহত ৪ কৃষক এবং এক সাংবাদিকের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
RAJIB CHAKRABORTY