অশান্তির আগুনে জ্বলছে দিল্লি। রাজনীতির উত্তাপে পুড়ছে জাতীয় রাজনীতি। বিরোধীদের নিশানায় মোদি সরকার। অমিত শাহের ইস্তফার দাবি কংগ্রেসের। কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারের সামবে ৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রেখেছে কংগ্রেস ৷
১) গত রবিবার থেকে দিল্লি পুড়ছে অশান্তির আগুনে ৷ সেসময় কী করছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ কোথায় ছিলেন তিনি?
২) কী করছিল কেন্দ্রের গোয়েন্দা সংস্থা? দিল্লি নির্বাচন শেষের পর এমন কী হল যাতে আজ পরিস্থিতি এত বয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷
advertisement
৩) এই হিংসা কী আচমকাই ঘটে যাওয়া ঘটনা যেমনটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বলছে? নাকি এত পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র, ইন্ধন? যেমনটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী দাবি করেছেন? কোনটা সত্যি?
৪) রবিবার যে সময়ে ঘটনার সূত্রপাত তার বহু আগেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল যে বড় কিছু ঘটবে ৷ খবর থাকা সত্ত্বেও ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে কত পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল?
৫) হিংসায় কোথায় ছিল আধাসেনা ৷ আধাসেনা নামাতে দেরি কেন? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছিল পুলিশকে ৷ পরিস্থিতি দিল্লি পুলিশের হাতের বাইরে বুঝেও কেন ডাকা হল না অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনীকে ৷
৬) সব থেকে বড় প্রশ্ন ৷ রণক্ষেত্র দিল্লি, পুড়ছে আগুনে ৷ সেসময় কোথায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৷ গত রবিবার থেকে কী করছেন তিনি?
কংগ্রেসের অন্তর্বতীকালীন প্রেসিডেন্ট সনিয়া গান্ধি বুধবার বলেন, ‘দিল্লি হিংসার জন্য শুধু কেন্দ্রই নয় সমানভাবে দায়ী দিল্লির কেজরি সরকারও ৷ গত ৭২ ঘণ্টা ধরে নিস্ক্রিয় হয়ে রয়েছে দিল্লি পুলিশ ৷ তারা পরিস্থিতি সামলাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ ৷ আসলে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে এর পিছনে ৷’
রবিবার থেকে দিল্লির অশান্তিতে এখনও পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ আহতের সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়েছে ৷ মৃত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সোনিয়া গান্ধি বলেন, ‘দিল্লিতে ষড়যন্ত্রের আগুনে তিনদিনে বহু প্রাণ গেল ৷ আগুনেও চুপ কেন্দ্র ৷ মৃতদের পরিবারের প্রতি দলের সমবেদনা রয়েছে এবং জখমদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে কংগ্রেস ৷ উসকানিতেই হিংসার আগুন ৷ এর জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দায়ী ৷ দিল্লি সরকার, কেন্দ্র ব্যর্থ ৷ যখন জ্বলছে দিল্লি, কোথায় ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ? কী করছিলেন তিনি? ইস্তফা দিন অমিত শাহ ৷ এদের নিস্ক্রিয়তাতেই দিল্লির এমন অবস্থা ৷’
এদিন এই সাংবাদিক সম্মেলনে সনিয়া গান্ধির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মনমোহন সিং, একে অ্যান্টনি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধি, গুলাম নবি আজাদ, পি চিদম্বরমের মতো শীর্ষ স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা ৷ যদিও এদিন রাহুল গান্ধিকে কোথাও দেখা যায়নি ৷ দলীয় সূত্রে খবর, তিনি এই মুহূর্তে বিদেশে রয়েছেন ৷
CAA বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ। রক্তাক্ত রাজধানীর রাজপথ। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় আরও অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বুধবার ভোররাতে নতুন করে ব্রহ্মপুরী-মুস্তাফাবাদে অশান্তির খবর মেলে। চলে পাথর বৃষ্টি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চারটি এলাকায় কারফিউ জারি রয়েছে। দেখা মাত্র পুলিশকে গুলি করারও নির্দেশ। সীলমপুর, মউজপুরে বাড়ানো নিরাপত্তা। পুলিশ, কমব্যাট ফোর্সের সঙ্গে এলাকায় টহল দিচ্ছে আধা সেনা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার রাতে সীলমপুর এলাকা ঘুরে দেখেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। বৈঠক করেন পুলিশের সঙ্গেও। অশান্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে CBSE-র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত। এই এলাকায় ৮৬টি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে।