সিবিআই-এর পেশ করা চার্জশিটে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কীভাবে ইন্দ্রাণী তাঁর সহকারীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, শিনার সই জাল করে বাড়ি মালিককে মেল করতে ৷ চিঠিতে বাড়িমালিককে জানানো হয় যে, শিনা ওই বাড়িতে আর থাকতে চায় না ৷ সমস্ত পাওনা টাকার হিসেব মিটিয়ে সে ওই বাড়ি ছেড়ে দিচ্ছে ৷
১৩ এপ্রিল, ২০১১ তে রাহুল মুখোপাধ্যায় তার বাবা পিটারকে পাঠানো একটি মেলে লেখে, তাঁর সৎ মা ইন্দ্রাণী তাকে এবং শিনাকে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছেন ৷ তারা দুজনেই ব্যাপারটাকে আর হালকাভাবে নিতে পারছেন না ৷ তাই হুমকির সমস্ত তথ্য প্রমাণ তারা নথি হিসেবে তুলে রাখছেন এবং প্রশাসনকেও জানিয়ে রেখেছেন ৷ নিজেদের নিরাপত্তা করতেই তারা এই ব্যবস্থা নিচ্ছে ৷ যদি তার অথবা শিনার কিছু হয় তাহলে ভারত এবং ব্রিটেনের প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে ৷
advertisement
শিনা খুন হওয়ার প্রায় নয় মাস বাদে, শিনার জাল অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর সৎ বোন বিধিকে একটি মেল পাঠানো হয় ৷ তদন্তকারীদের মতে, শিনা যে এখনও বেঁচে আছে এই ধোকার টাঁটিটা বজায় রাখতে ওই মেলটি করেন ইন্দ্রাণী ৷ চিঠির বয়ান অনুযায়ী, শিনা বিধিকে সাবধান করেছিল তাঁর ব্যাপার থেকে দূরে থাকার জন্য ৷ প্রসঙ্গত, শিনা বোরা সন্দেহজনকভাবে উধাও হয়ে যাওয়ার পর, বিধিও বারবার তার বাবা- মা-র থেকে শিনা কোথায় আছে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছিল ৷
চার্জশিট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, খুন হওয়ার বেশ কিছুদিন আগে শিনা এবং ইন্দ্রাণীর মধ্যে বেশ কিছু মেল চালাচালি হয়েছিল ৷ প্রতিটা মেলেই ইন্দ্রাণী শিনাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল, যাতে শিনা ২৪ এপ্রিল, ২০১২ তার সঙ্গে দেখা করে ৷ ইন্দ্রাণী এও বলেছিলেন, তিনি শিনাকে রাহুলের সঙ্গে বাগদান করার জন্য আংটি দিতে চান ৷ এমনকী, রাহুল-শিনার সম্পর্কে তার আর কোনও আপত্তি নেই তাও জানান ৷ হয়ত, মায়ের এমন কথাকেই বিশ্বাস করে শিনা দেখা করতে গিয়েছিলেন ৷ আর এই বিশ্বাসই তাঁর শেষ ডেকে এনেছিল ৷
শিনা বোরা হত্যা রহস্যের বিভিন্ন দিক সামনে আসছে সিবিআই-এর চার্জশিট পেশের পর ৷ বিধি মুখোপাধ্যায় এবং রাহুল মুখোপাধ্যায়ের স্বীকারোক্তি আরও মজবুত করেছে সিবিআই-এর চার্জশিটকে ৷ তদন্তকারীদের অনুমানকে দৃঢ় করেছে রাহুলের দেওয়া নথি এবং মেল-ফোন রেকর্ডস ৷ জনসমক্ষে রাহুল তার বাবা পিটারকে নির্দোষ বললেও, তারই সিবিআইকে তুলে দেওয়া তথ্যপ্রমাণ বলছে অন্য কথা ৷ হাই-প্রোফাইল এই মার্ডার স্টোরি থেকে ধীরে ধীরে উঠছে পর্দা ৷