কিন্তু রাজ্য সরকারের আপত্তিতে পথ পাল্টে তা চলে যায় এসপ্ল্যানেডে। সেখান থেকে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার হয়ে তবে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে। বউবাজারের সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময় মাটিতে ধস নেমে বাড়ি ভাঙার জেরে প্রশ্ন উঠেছে, মেট্রোর রুট বদল করা কি ঠিক কাজ হয়েছিল? আর এই নিয়েই বিরোধীদের তরফে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
advertisement
ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর নতুন রুট তৈরির সময় রাইটস-Sর এক বিশেষ ইউনিট সমীক্ষা চালিয়েছিল। সংস্থার এক প্রতিনিধির বক্তব্য, এ ধরনের সুড়ঙ্গ সাধারণত রাস্তার নীচেই করা হয়। তাতে বাড়িঘরে ক্ষতির সম্ভাবনা কমে। সেই কারণেই বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটকে বাছা হয়েছিল। তাঁর দাবি, রুট বদলের ফলে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময় কিছু বাড়ির সমস্যা হতে পারে বলে রিপোর্ট দিয়েছিল রাইটস-এর বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেই রিপোর্ট রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বউবাজারের বাড়িতে নতুন ফাটল, শেষমেশ কি হবে সুড়ঙ্গ জোড়ার কাজ, নাকি সবই অনিশ্চিত
প্রশ্ন উঠেছে, সমীক্ষা রিপোর্টে সতর্ক করা হলেও তা মানা হয়নি কেন?কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড’ তরফে জানানো হয়েছে , হাওড়ার দিক থেকে খোঁড়া সুড়ঙ্গ যখন নদী পেরিয়ে মহাকরণের কাছাকাছি চলে এসেছে, তখন প্রস্তাবিত রুট নিয়ে আপত্তি জানায় রাজ্য সরকার। পুরনো রুটে ব্রেবোর্ন রোডের উপরে মহাকরণ স্টেশন তৈরির কথা ছিল। সে জন্য সেখানে জমি অধিগ্রহণ এবং রাস্তা বন্ধ করার দরকার হত। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ব্রেবোর্ন রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তা বন্ধ রাখা সম্ভব নয়।
তা ছাড়া, মেট্রো চালু হওয়ার পরে যাত্রীর চাপ সামাল দেওয়াও ব্রেবোর্ন রোডের পক্ষে সম্ভব হবে না। সেন্ট্রাল স্টেশনের জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা যায়। দায়ের হয় মামলা। সে জন্য কেএমআরসিএল-কে রুট বদলের প্রস্তাব দেয় রাজ্য। তাদের তরফে আরও বলা হয়, মেট্রো এসপ্ল্যানেডের মতো বাণিজ্যিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছুঁয়ে না-গেলে যাত্রীদের কোনও উপকার হবে না।এই অবস্থায় ঠিকাদার সংস্থাকে পথ পাল্টেই কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়। যা নিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে।
মহাকরণ থেকে সোজা বৌবাজার যাওয়ার বদলে বিবাদী বাগ বাস স্ট্যান্ড, হেমন্ত বসু সরণি, রাসমণি অ্যাভিনিউ, এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশন, এস এন ব্যানার্জি রোড, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, হিন্দ সিনেমা হয়ে তবে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ধরে শিয়ালদহে মেট্রোর সুড়ঙ্গ নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় রাজ্য। কেন্দ্রের ছাড়পত্র পাওয়ার পরে সেই রুটেই কাজ চলছিল। কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে লাগাতার এই বিপর্যয়।যদিও বিরোধীদের এই অভিযোগ মানতে নারাজ উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, 'রুট বদলে কোথাও কোনও সমস্যা নেই৷ বউবাজারে আসলে কসমেটিক ওয়ার্ক হয়েছে। তাই এই পরিস্থিতি বারবার তৈরি হচ্ছে।'