থানা বাদলপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। একটি রোডওয়েজ বাস দ্রুতগতিতে এসে মাতার জ্যোতি নিয়ে ফিরছিলেন এমন কয়েকজন ভক্তকে সজোরে ধাক্কা মারে। এতে ঘটনাস্থলেই ২ জনের মৃত্যু হয় এবং আরও ২ জন গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে এবং আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
advertisement
বুলন্দশহরের খানপুর চোলা গ্রামের ধর্মেন্দ্র সিং জানান, তাঁর ২০ বছর বয়সী ছেলে গৌরব, বন্ধু নিখিল, রচিত ও মণীশের সঙ্গে দিল্লির কালকা মন্দির থেকে মাতার জ্যোতি নিয়ে ফিরছিল। তাঁরা শুক্রবার রাতে এনএইচ ৩৪ ধরে লাল কুয়া হয়ে দাদরির দিকে যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ডেরি মচ্ছা গ্রামের কাছে পিছন থেকে আসা একটি রোডওয়েজ বাস অত্যন্ত বেপরোয়া গতিতে এসে তাঁদের ধাক্কা মারে।
আরও পড়ুন: জমি নিয়ে ভয়ঙ্কর বিবাদের জের, চরম সিদ্ধান্ত ভাইয়ের! বোন আর জামাইবাবু পেলেন চরম শিক্ষা…
দুর্ঘটনার পর চারপাশে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়। চারজনই গুরুতর আহত হন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসারত অবস্থায় গৌরব ও নিখিল মারা যান, অন্যদিকে রচিত ও মণীশের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বর্তমানে তাঁদের গ্রেটার নয়ডার হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
ধর্মেন্দ্র সিং পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অজ্ঞাত বাসচালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ চালকের খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে।
নবরাত্রির আগে প্রতি বছর বহু ভক্ত দিল্লি থেকে মাতার জ্যোতি নিয়ে নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা, দাদরি এবং বুলন্দশহরের দিকে যাত্রা করেন। এই ভক্তদের বড় দল প্রায়শই রাস্তায় যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি তাঁদের অসাবধানতার কারণে বা অন্য যানবাহনের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনাও ঘটে।
প্রতিবছর এই রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। কখনো তাঁদের গাফিলতির কারণে, কখনও অন্যান্য যানবাহনের দ্রুতগতির কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু প্রশাসন এই বিষয়ে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। যাত্রাপথে কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম না থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। যদি এই যাত্রাপথে বিশেষ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তবে এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
যেহেতু নবরাত্রি উপলক্ষে বহু ভক্ত এই যাত্রা করেন, পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের উচিত তাঁদের নিরাপত্তার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করা এবং তা কার্যকর করা। এতে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমবে।
অনেক রোডওয়েজ বাসচালক অতিরিক্ত গতি ও অসতর্কতার সঙ্গে বাস চালান, যার ফলে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তাঁদের জন্য আরও কঠোর নিয়ম লাগু করা প্রয়োজন। যদি পুলিশের তরফ থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং নিয়ম ভাঙার জন্য কড়া শাস্তির বিধান থাকে, তবে হয়তো এই ধরনের দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব হবে।
এই ধরনের যাত্রার জন্য নির্দিষ্ট রুট তৈরি করা, পুলিশের নজরদারি বাড়ানো এবং যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হলে ভবিষ্যতে এই রকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতে পারে।