অরুণ জেটলির দাবি, ‘‘ ব্যাঙ্কে টাকা জমা মানেই তা বৈধ নয় ৷ নোট বাতিলের প্রভাব পড়তে পারে জিডিপি-তে ৷ দ্বিতীয় বা তৃতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপি কমতে পারে ৷ নোটবন্দির সুফল মিলবে দীর্ঘমেয়াদী পর্যায়ে ৷ নোট বাতিলে উপকৃত হবে দেশের অর্থনীতি ৷ ’’
নরেন্দ্র মোদির নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কি ঐতিহাসিক ভুল ? রিজার্ভ ব্যাঙ্কের চাঞ্চল্যকর রিপোর্টেই স্পষ্ট হল, কালো টাকার এককণাও উদ্ধার হয়নি। উল্টে কালো টাকার সিংহভাগই ফেরত এসেছে ব্যাঙ্কে। নোট ছাপানোর খরচও দ্বিগুণ হয়েছে। বহু বছর ধরে সেই ভার বইতে হবে দেশের অর্থনীতিকে। চাপে পড়বেন আম-আদমি। নোট বাতিলের পর প্রচারের ঢক্কানিনাদ কম হয়নি। আরবিআই রিপোর্টের পর এখন মুখ লুকোতে হচ্ছে মোদি সরকারকেই।
RBI-র রিপোর্টের ভিত্তিতে বাস্তবে যা হয়েছে
কালো টাকা ফেরত আসেনি
৩ লক্ষ কোটি কালো টাকা ফেরত আসবে না বলে আশা
৮ হাজার ৯০০ কোটির ১০০০ টাকার নোট জমা পড়েনি
৭ হাজার ১০০ কোটির ৫০০ টাকার নোট ফেরেনি
কালো টাকার কারবারিদের হাতে হেরে ভূত মোদি সরকার। চূড়ান্ত ফ্লপ নোট বাতিল। কালো টাকা উদ্ধার তো হয়ইনি, উল্টে অর্থনীতিতে ব্যাঙ্কে ঢুকেছে লক্ষ কোটির কালো টাকা। আরবিআইয়ের বার্ষিক রিপোর্টেই স্পষ্ট হয়ে গেল, নোট বাতিল পর্বে একের পর এক ধাক্কা খেয়েছে সরকার। কালো টাকার টিকিও ছোঁয়া যায়নি ৷
-মোট ১৫.৪৪ লক্ষ কোটির মধ্যে ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে ১৫.২৮ লক্ষ কোটি
- অর্থাৎ ফেরত এসেছে প্রায় ৯৯ শতাংশ টাকাই
- সাড়ে ১২ লক্ষ কোটির বেশিবেশি জমা পড়বে না বলে অনুমান করে কেন্দ্র
- আদতে সাদা ও কালো টাকার পুরোটাই জমা পড়েছে ব্যাঙ্কে
- কালো টাকা ব্যাঙ্কে ঢোকায় চাপ অর্থনীতিতে
- নতুন নোট ছাপাতে গত অর্থবর্ষে খরচ ৮ হাজার কোটি
- ২০১৫-১৬ সালে এই খাতে খরচ ৩ হাজার ৪২০ কোটি টাকা
- আয় কমায় কেন্দ্র ডিভিডেন্ট বাবদ ৩১ হাজার কোটি টাকা কম দিয়েছে আরবিআই
তাই প্রশ্ন, কালো টাকা কোথায় গেল? নোট পোড়ানো হয়নি। জলে ফেলেও নষ্ট হয়নি। কালো টাকা ফেরত এসেছে ব্যাঙ্কেই। নোট বাতিলের জেরে চাকরি খুইয়েছিলেন বহু মানুষ। ব্যাঙ্কের সামনে দিনভর লাইনে দাঁড়িয়ে কি মিলল ? এই প্রশ্নই উঠছে এখন ৷
একটি প্রত্যাশাও পূরণ হয়নি। নোট বাতিলের পর নিয়ম করে নিয়ম বদলেছিল কেন্দ্র। দাবি করা হয়, কালো টাকার কারবারিদের আটকাতেই পরিকল্পনা করে নিয়ম বদল হচ্ছে। ঘনঘন নিয়ম বদলে কালো টাকা উদ্ধার হয়নি। উল্টে বড়সড় সঙ্কটের মুখে পড়েছে ব্যাঙ্কিং শিল্প।
ব্যাঙ্কে বিপুল নগদের সমস্যায় ব্যাঙ্কিং শিল্প
অধিকাংশ ব্যাঙ্কই সেভিংস অ্যাকাউন্টে সুদ কমিয়েছে
অর্থনীতিতে কালো টাকা ঢোকায় চাপ মুদ্রাস্ফীতিতে
এর দায় বহন করতে হবে আম-আদমিকে
আরবিআই রিপোর্ট সামনে আসার পরেই সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। আর্থিক পরিসংখ্যান তো আর মিথ্যে বলে না ? তাই মুখ লুকোনোর উপায় খুঁজতে হচ্ছে মোদি সরকারকে।