বলাই বাহুল্য, এটা এখন এই শহরের উন্নয়নের পরিচায়ক হয়ে উঠেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই প্রকল্প যেন প্রযুক্তিগত বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। কারণ শহরবাসী এবং ট্র্যাফিক বিশেষজ্ঞরা এই ওভারব্রিজ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। লাল সঙ্কেত দেখিয়ে এই প্রকল্পকে ৯০ ডিগ্রি ব্লান্ডার বলে আখ্যা দিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- কাচের গ্লাসে হলুদ, আলোর ম্যাজিক! সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘গ্লোয়িং ওয়াটার ট্রেন্ড’ ব্যাপারটা কী?
advertisement
৬৪৮ মিটার দীর্ঘ এবং ৮ মিটার চওড়া এই ওভারব্রিজে রয়েছে একটি তীক্ষ্ণ ৯০-ডিগ্রির টার্ন বা বাঁক। আর এটা যেন বিপদের সঙ্কেত হিসেবে দেখছেন শহরবাসী এবং ট্র্যাফিক বিশেষজ্ঞরা। সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন যে, এই ধরনের নকশা মৌলিক ট্রাফিক নিরাপত্তা নীতিগুলিকে লঙ্ঘন করে! এক স্থানীয় যাতায়াতকারী বলেন যে, “এটা বিপর্যয় ডেকে আনবে।” একই উদ্বেগের সুর শোনা গেল অন্য এক বাসিন্দার কথাতেও। তিনি বলেন যে, “এই তীক্ষ্ণ বাঁকের কারণে হামেশাই গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হতে পারে। বিশেষ করে রাতে কিংবা আবহাওয়া খারাপ থাকলে এই আশঙ্কা আরও বাড়বে।”
এদিকে, বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, এই বাঁকগুলি বেশ অস্বাভাবিক কিংবা রীতিবিরুদ্ধ। সেই সঙ্গে তা সম্ভাব্য বিপজ্জনকও বটে! বিশেষ করে যেখানে শহরের সবথেকে ব্যস্ত জায়গায় যানজটের সমস্যা সামাল দেওয়ার জন্য এই কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, সেখানে তো তা আরও বিপদ ডেকে আনতে পারে। এই ব্রিজের লেআউট রিভিউ করেছেন একজন অবসরপ্রাপ্ত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বলেন, “দ্রুত গতিতে যান চলাচলের ক্ষেত্রে এই বাঁকটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এমনকী মাঝারি গতিতে ভারী যানবাহনগুলিরও নিরাপদে বাঁক ঘুরতে সমস্যা হবে।”
ব্রিজের নকশা দেখে এখন সাধারণ মানুষ এই প্রশ্নই করছেন যে, “এই প্রকল্পটিতে কি স্ট্রাকচারাল ইন্টিগ্রিটির তুলনায় রাজনৈতিক সময়সীমাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে?” নিকটবর্তী এক দোকানের দোকানি বলেন যে, “আমরা বছরের পর বছর ধরে এই ব্রিজের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু নিরাপত্তার মূল্যে তা কখনওই নয়।” সেই সঙ্গে তাঁর এ-ও প্রশ্ন যে, “মানুষের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে, এমন একটি সেতু উদ্বোধন করার তাড়াহুড়োটা কীসের ছিল?”
আর এই সমস্ত প্রশ্ন উঠছে দেখে সেই প্রসঙ্গে পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (PWD)-এর মন্ত্রী রাকেশ সিং পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন যে, “যখনই কোনও সেতু নির্মাণ করা হয়, তখন তথাকথিত কিছু বিশেষজ্ঞের উদ্রেক হয় এবং তাঁরা নিজেদের মতামত দিতে থাকেন। কিন্তু সত্যিটা হল, প্রত্যেকটা সেতুকেই একাধিক প্রযুক্তি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যদি কারও গুরুতর আপত্তি থাকে, তাহলে একটি প্রযুক্তিগত তদন্ত করা হবে।”