আরও পড়ুনঃ ‘যখন রাহুল গান্ধির বিমান সমস্যায় পড়েছিল…’, রাজনীতির ঊর্ধ্বে ওঠার বার্তা প্রধানমন্ত্রী মোদির
নেটওয়ার্ক 18-এর গ্রুপ সম্পাদক রাহুল জোশীকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধীদের ‘এক বছর এক প্রধানমন্ত্রী’ ফরমুলা এবং জোটের মধ্যে আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দিয়ে আঞ্চলিক দলগুলিকে সম্মান জানাতে হয়, সেই সম্পর্কে নিজের মত জানান।
advertisement
সঙ্গে মোদি এও বলেন, কংগ্রেস রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ের মতো রাজ্যগুলিতে কীভাবে ক্ষমতা ভাগের সূত্র কাজে লাগাচ্ছে কিন্তু প্রতিশ্রুতি পালন করছে না, শুধু তাই নয়, নিজের দলের নেতাদের সঙ্গেই বারবার বিশ্বাসঘাতকতা করছে।
ইন্ডিয়া জোট যদি সরকার গঠন করে তাহলে রোটেশনের ভিত্তিতে একজন করে নেতা প্রধানমন্ত্রী হবেন, কারণ কোনও একজনকে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরতে পারছেন না। এই বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, দেশের জন্য জোট সরকার না কি স্থিতিশীল সরকার, কোনটা বেশি কার্যকরী।
উত্তরে মোদি বলেন, “দুটি ভিন্ন প্রশ্ন। কংগ্রেসের চরিত্র দেখুন। রাজস্থানে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত দল। তখন তারা একটা ফরমুলা সামনে আনে আড়াই বছর করে একজন মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। অর্থাৎ প্রথম আড়াই বছরে একজন, পরের আড়াই বছরে আরেকজন। এটা পরিচিত সূত্র। ছত্তিশগড়ে দলের মধ্যেই মারামারি হয়। তারা সেখানেও একই ফরমুলা নিয়ে আসে। আড়াই বছরের মুখ্যমন্ত্রী। কোনওভাবে তারা বিষয়টা মেটাতে চেয়েছিল। কিন্তু আড়াই বছর পর তারা সিদ্ধান্ত বদলে ফেলল। অর্থাৎ নিজেদের দলের নেতাদের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করল। এটা ওদের পুরনো রোগ। কিন্তু এ থেকে প্রমাণ হয়ে যায়, কংগ্রেস এমন ফরমুলা নিয়ে চিন্তাভাবনা করে”।
সঙ্গে মোদি যোগ করেন, “মিডিয়া থেকে জেনেছিলাম, ওরা একটা ছোট বৈঠক করেছিল। সেখানে সংবাদমাধ্যম জিজ্ঞেস করে, মোদি বারবার প্রশ্ন তুলছেন, দেশ যার হাতে থাকবে, জনগণের তার নাম জানা উচিত। ভারত একটা বিশাল দেশ। সেখানে একটা নাম তো দিতে হবে। এমনকী ক্রিকেট দলেও একজন অধিনায়ক থাকে। কবাডি দলেও অধিনায়ক হিসেবে একজনের নাম দেওয়া হয়। এত বড় দেশ কে সামলাবে সেটাই আপনি বলছেন না। তখনই ওরা ‘এক বছর এক প্রধানমন্ত্রী’ ফরমুলা নিয়ে এল। প্রতি বছর একজন নতুন নেতা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন, নতুন সরকার ও নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। পাঁচ বছর তারা ব্যস্ত থাকবে শপথ অনুষ্ঠানে, দেশ ব্যস্ত থাকবে কঠিন আয়োজনে”।
মোদির প্রশ্ন হল, একটা দেশ কী এভাবে চালানো যায়? বিশেষ করে ভারতের মতো বৃহৎ একটা দেশ। তাঁর কথায়, “জোট সরকারের যুগে ৩০ বছরের অস্থিতিশীলতা দেখেছে দেশবাসী”। প্রধানমন্ত্রী জানান, বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও আঞ্চলিক দলগুলিকে সর্বদা সম্মান করেছে। এটা এনডিএ-র চরিত্র। বিজেপি এই মনোভাব নিয়েই চলে।
মোদি বলেন, “আজ বিশ্বে ভারতের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ ১৪০ কোটি মানুষ একটি স্থিতিশীল, শক্তিশালী এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করেছে। তাই যে কেউ এই সরকারকে বিশ্বাস করতে পারেন, কারণ এই সরকারের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। জোট সরকারকে কেউ বিশ্বাস করে না। এত বড় দেশ এভাবে চলতে পারে না। কিন্তু আজ দেশের রাজনীতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে একটা দল যতই বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করুক না কেন আঞ্চলিক দলগুলিকে সম্মান করতেই হবে”।
আরও পড়ুনঃ ‘আমি মনে করি কংগ্রেসের ইস্তেহারে মুসলিম লীগের স্ট্যাম্প রয়েছে’ : প্রধানমন্ত্রী মোদি
মোদি আরও বলেন, বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও জোট সঙ্গীদের নিয়ে এনডিএ সরকার গঠন করে। তাঁর কথায়, “রাজনীতিতে দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার জন্য আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা ভাগ করে নিতে হবে”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেই কারণেই আমরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও জোট সঙ্গীদের নিয়েই সরকার গঠন করেছে এনডিএ। দেশের রাজনীতির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার জন্য আঞ্চলিক আকাঙ্খাকে সমান সম্মান ও ভাগ দিতে হবে। এনডিএ সবাইকে নিয়ে এই চরিত্র গঠন করেছে। এবং বিজেপি দেখিয়েছে, তারা এই কাজ করতে পারে”।