মোদির বক্তব্যে উঠে আসে যে আফ্রিকা প্রথমবার জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক হওয়ায় এই সময়টিই উন্নয়ন-পরিমাপের কাঠামোকে পুনর্বিবেচনা করার সবচেয়ে উপযুক্ত মুহূর্ত। তিনি বলেন, ভারতের সভ্যতার মূল মূল্যবোধ, বিশেষত ‘অখণ্ড মানবতাবাদ’-এর নীতি, ভবিষ্যতের পথ দেখাতে সক্ষম।
প্রধানমন্ত্রী ফেন্টানিল–সহ প্রাণঘাতী সিন্থেটিক মাদকের দ্রুত প্রসার নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এই ধরনের মাদক জনস্বাস্থ্য, সামাজিক স্থিতি এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। মোদি জি২০-এর অধীনে একটি বিশেষ ‘ড্রাগ–টেরর নেক্সাস প্রতিরোধ উদ্যোগ’ গঠনের প্রস্তাব দেন, যা আর্থিক, প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা–সংক্রান্ত ব্যবস্থা সমন্বয় করে পাচারচক্র ভাঙতে এবং সন্ত্রাস–অর্থায়নের একটি প্রধান উৎস শুকিয়ে দিতে সহায়তা করবে।
advertisement
মোদি এক্স–এ লেখেন, “আসুন, এই নোংরা মাদক-সন্ত্রাস অর্থনীতিকে নস্যাৎ করি।”
তিনি আরও জানান, বহু দেশেই পরিবেশ–সমন্বিত, সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ ও সামাজিকভাবে সুসংহত জীবনযাপনের পরম্পরা রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি জি২০–এর অধীনে একটি ‘গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল নলেজ রিপোজিটরি’ তৈরির প্রস্তাব রাখেন। তার মতে, ভারত এই ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ ঐতিহ্য বহন করে এবং এই ভান্ডার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সমষ্টিগত জ্ঞানকে সংরক্ষণ ও ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে।
প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক দুর্যোগ ও জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতিতে দ্রুত মোতায়েনযোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে জি২০ গ্লোবাল হেলথকেয়ার রেসপন্স টিম গঠনের প্রস্তাব করেন। তার বক্তব্য, জি২০ দেশগুলির প্রশিক্ষিত মেডিক্যাল টিম একসঙ্গে কাজ করলে আন্তর্জাতিক মানবিক সঙ্কট মোকাবিলায় দক্ষতা বাড়বে।
মোদি আফ্রিকার উন্নয়ন স্বার্থে ‘জি২০–আফ্রিকা স্কিলস মাল্টিপ্লায়ার ইনিশিয়েটিভ’-এরও প্রস্তাব দেন। তিনি জানান, ট্রেন–দ্য–ট্রেনারস মডেলে আগামী দশ বছরে আফ্রিকায় এক মিলিয়ন প্রশিক্ষিত ট্রেনার তৈরির লক্ষ্য নেওয়া উচিত, যা যৌথ ভাবে সব জি২০ দেশ অর্থায়ন করবে। এই প্রশিক্ষকেরা পরবর্তী সময়ে আফ্রিকার লক্ষ লক্ষ যুবককে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে।
ফেন্টানিলের প্রসঙ্গও তুলেছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামফোসার সাম্প্রতিক কাজকর্মে অসন্তুষ্ট হয়ে এ বারের সম্মেলনে থাকছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
