TRENDING:

Bengaluru || ঠিক যেন সিনেমা! লড়াই করে অপহরণকারীদের হাত থেকে শিশুকে বাঁচালেন প্রৌঢ় ভ্যান চালক! রাতভর রুদ্ধশ্বাস নাটকের পর ধৃত ২!

Last Updated:

Bengaluru || গত ৩০ জুন বেঙ্গালুরুতে (Bengaluru) ঘটে যাওয়া এই ঘটনা হার মানায় হিন্দি ছবির চিত্রনাট্যকেও!

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
স্কুল শেষে ভ্যানে চেপে বাড়ি ফিরছিল শিশুটি। তার সমস্ত বন্ধু নেমে যাওয়ার পরে গাড়িতে একাই ছিল সে। আচমকাই মাঝ রাস্তায় থামল গাড়ি। অপহরণের চেষ্টা করা হল বছর ছয়েকের ওই শিশুটিকে। কিন্তু প্রৌঢ় ভ্য়ান চালক অপহরণকারীদের সঙ্গে রীতিমতো লড়াই করে বাঁচালেন শিশুটির প্রাণ। দিনভর অপহরণ-নাটক চলার পর অবশেষে ভোর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে দুই অভিযুক্তকে। গত ৩০ জুন বেঙ্গালুরুতে (Bengaluru) ঘটে যাওয়া এই ঘটনা হার মানায় হিন্দি ছবির চিত্রনাট্যকেও!
advertisement

আরও পড়ুন: বালিকা বধূ দেখেছেন ১৮ বার, তরুণ মজুমদার পরিচালিত মিষ্টি প্রেমের ছবি এখন বিরল, বললেন মিঠুন

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে এক জনের নাম এস শক্তিভেলু (S Shaktivelu)। কেআর পুরমের (KR Puram) বাসিন্দা ২০ বছর বয়সী ওই যুবকের বাবা সুরেশ কুমার গত ২৫ বছর ধরে কেআর পুরম ও তার আশপাশের অঞ্চলে স্কুল ভ্যান চালাতেন। শক্তিভেলুও মাঝেমধ্যে স্কুল ভ্যান চালাত। গত এপ্রিল মাসে বছর ছয়েকের ওই শিশুকে স্কুল থেকে দেওয়া-নেওয়া করেছিল সে। ফলে শিশুটির মায়ের ফোন নম্বরও ছিল তার কাছে। পরে ওই শিশু ও তার পরিবার অন্য জায়গায় চলে যাওয়ায় অন্য ভ্যানে যাতায়াত করতে শুরু করে শিশুটি। আর যেহেতু শিশুটির বাবা-মা দুজনেই কর্মরত, সেই কারণে শক্তিভেলুর ধারণা হয়েছিল যে, পরিবারটা অত্যন্ত ধনী। আর ওই শিশুকে অপহরণ করলে ভালো মুক্তিপণও পাওয়া যেতে পারে। এর পরেই নিজের বন্ধু ৩০ বছর বয়সী সুনীতা জোসেফের (Sunita Joseph) সঙ্গে মিলে ওই শিশুটিকে অপহরণ করার ছক কষে সে।

advertisement

ঠিক কী হয়েছিল ওই দিন? বছর ষাটেকের স্কুল ভ্যান চালক মহম্মদ বাশার (Mohammed Basha) কথায়, সে-দিন সকলেই নেমে গিয়েছিল। গাড়িতে একাই ছিল ওই শিশুটি। তাকে বাড়িতে নামাতে যাওয়ার সময় আচমকাই পথ আটকায় এক মহিলা। তিনি দাবি করেন, তাঁর মেয়েকে প্রতিদিন স্কুলে দেওয়া-নেওয়া করতে হবে। আর কাছেই তাঁর বাড়ি। সেই বাড়ি দেখানোর অছিলায় চালককে ডেকে নিয়ে যান তিনি। কিন্তু চালক শিশুটিকে কোলে নিয়েই মহিলাকে অনুসরণ করতে শুরু করেন। আশপাশে কোনও বাড়ি না-দেখে বাশা বিপদ আঁচ করেন। তিনি তড়িঘড়ি ভ্যানের দিকে ফিরতে শুরু করেন। এর পর ওই মহিলা বাশার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। যোগ দেয় তার এক বলিষ্ঠ পুরুষ সহযোগীও। মহম্মদ বাশা আরও বলেন, “ওরা আসলে আমার থেকে বাচ্চাটাকে ছিনিয়ে নিয়ে পালাতে চাইছিল। বুঝতে পারি, ওকে অপহরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। মহিলা ওই শিশুটিকে ভ্যানের সিট থেকে তুলে নিতে চাইছিল। আর তার সহযোগী আমার মুখে অনবরত ঘুষি চালিয়ে যাচ্ছিল। অনেক কষ্টে আমি শিশুটির হাত ধরে দরজাটা বন্ধ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম। ঠিক সেই সময় সেখানে কিছু পথচারী আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। ভিড় জড়ো হতে দেখে পালায় ওরা।”

advertisement

এর পর ওই ভ্যান চালক শিশুর মা-কে ফোনে সব ঘটনা জানান। বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরতা মহিলা সন্তানের বিপদের কথা শুনে শিউরে ওঠেন এবং বাশাকে তাঁদের বাড়িতেই অপেক্ষা করতে বলেন। এর পর তিনি শিশুটির বাবাকেও এই ঘটনার কথা ফোনে জানান। দু’জনেই কাজ ফেলে বাড়িতে ছুটে এসে যারপরনাই ধন্যবাদ জানান বাশাকে।

কিন্তু ঘটনার এখানেই শেষ নয়। এর পর শিশুটির মায়ের কাছে একটি ফোন আসে। একটি কন্ঠস্বর ভেসে আসে, “আমরা আপনার ছেলেকে অপহরণ করার চেষ্টা করেছিলাম। যাই হোক, আমরা পরে ঠিক ওকে আবার অপহরণ করব! তবে যদি আপনারা আমাদের ৫ লক্ষ টাকা দেন, তাহলে এই পরিকল্পনা আমরা বাতিল করব!” ঘটনা গুরুতর বুঝে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শিশুটির অভিভাবকরা। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে বেঙ্গালুরু রুরালের আভালাহাল্লি পুলিশের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ পেয়েই তৎপর হন পুলিশ কর্মীরা। সন্দেহভাজনদের উপর নজর রাখার পাশাপাশি ফোনও ট্র্যাক করতে শুরু করেন তাঁরা। উচ্চপদস্থ কর্তারা সাধারণ পোশাকে প্রাইভেট গাড়ি ও মোটরবাইক ভাড়া করে সন্দেহভাজনদের উপর নজরদারি চালান।

advertisement

এরই মধ্যে ফের শিশুটির মায়ের কাছে অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। বলা হয়, “আপনাদের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যক্তিগত ক্ষোভ নেই। আপনার ছেলেকে অপহরণ করার জন্য এক ব্যক্তি আমাদের সুপারি দিয়েছে। আজ রাতেই যদি আপনারা আমাদের ২ লক্ষ টাকা দেন, তাহলে আমরা সেই ব্যক্তির নাম আপনাদের বলে দেব।” কথোপকথন চালিয়ে যেতে শিশুটির বাবা পাশ থেকে বলেন, “আমি টাকা দিতে রাজি।” এর পর ও-পাশ থেকে অভিযুক্ত নির্দেশ দেয় যে, টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে মাঝ রাতে হোসকোটে এলাকার এমভিজে কলেজের কাছে অপেক্ষা করতে হবে।

advertisement

এর পর বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে স্থান পাল্টাতে থাকে অভিযুক্ত। শিশুর বাবাকে এ-বার হোসকোটে এলাকার টোল বুথের কাছে যেতে বলা হয়। সব শেষে কাটামানাল্লুর ক্রসের সামনেই টাকার ব্যাগ রাখার স্থান চূড়ান্ত করে অভিযুক্ত। এ-দিকে আবার ওঁত পেতেছিলেন পুলিশকর্মীরাও। শিশুটির বাবার গাড়ি থেকে তাই ৩০০ মিটার দূরত্ব রেখে নজরদারি চালাচ্ছিলেন তাঁরা। প্রায় রাত ৩টে ৩০ মিনিট নাগাদ অভিযুক্ত ফের ফোন করে শিশুর বাবাকে জানায়, টাকার ব্যাগটা কাটামানাল্লুর গেটের সামনে ফেলে দিতে হবে। এ-বার পুলিশের নির্দেশ মেনে তিনি ওই ব্যাগটি ব্রিজের উপর থেকেই ছুড়ে দেন। যাতে ওই ব্যাগ পর্যন্ত পৌঁছতে আরও পাঁচ মিনিট সময় লেগে যায় অভিযুক্তদের। আর এতেই কাজ হয়। ব্যাগ আনতে যেতেই অভিযুক্তকে ঘিরে ফেলে বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং আটক করা হয় তাকে। পরে তার সহযোগী সুনীতাও গ্রেফতার হয়।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
ফাঁকা জায়গার লাগবে না, আমবাগানেই হচ্ছে কুইন্টাল কুইন্টাল ফলন! বিনা ব্যয়ে লাভ পাচ্ছেন চাষি
আরও দেখুন

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত শক্তিভেলুর নামে আগেও চুরির মামলা হয়েছে। মদে আসক্ত ওই যুবক দেনার দায়ে ডুবেছিল। এর জন্যই সে শিশুটিকে অপহরণের ছক কষেছিল বলে অনুমান। আর অপহরণের ছক সফল করতে সে এক সপ্তাহ ধরে মহম্মদ বাশার স্কুল ভ্যানের গতিবিধির উপরেও নজর রেখেছিল।

বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
Bengaluru || ঠিক যেন সিনেমা! লড়াই করে অপহরণকারীদের হাত থেকে শিশুকে বাঁচালেন প্রৌঢ় ভ্যান চালক! রাতভর রুদ্ধশ্বাস নাটকের পর ধৃত ২!
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল