ধৃত প্রমোদ নয়ডার সেক্টর ৩৭-এর বাসিন্দা। তার কাছ থেকে একটি জাল আধার কার্ড, এয়ারফোর্স জাল আইডি, ২৬টি অ্যাডমিট কার্ড, ৩৮টি ব্যাঙ্কের চেক, ১৪টি পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র উদ্ধার করেছে এসটিএফ।
১৭ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি ছিল পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ায় নিয়োগ বাতিল করে দেওয়া হয়। ৫ মার্চ গোপন সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পারে, এই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের মাথা হলেন মথুরার মনু পণ্ডিত এবং তার এক সহযোগী। দুজনে দিল্লির মুখার্জি নগরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে রয়েছেন। এরপরই দিল্লিতে অভিযান চালায় এসটিএফ।
advertisement
মুখার্জি নগরে পৌঁছে পুলিশ দেখে তিন যুবক রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে। তাঁদেরই একজন প্রমোদ পাঠক। নিশ্চিত হওয়ার পরেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু প্রমোদ হম্বিতম্বি শুরু করেন। বলেন, ‘‘এয়ারফোর্সে চাকরি করি। আমার গায়ে হাত দেবেন না।’’ এয়ারফোর্সের আইডি-ও দেখান। সঙ্গে সঙ্গে বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে তার বিরুদ্ধে তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রমোদ। জানান, এর সঙ্গে তিনি জড়িত নন। এই ঘটনায় কারা জড়িত, তাও জানেন না। কিন্তু তাঁর দুটো মোবাইল পরীক্ষা করতেই সব ফাঁস হয়ে যায়। প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত একাধিক চ্যাট পাওয়া যায়। এমনকী, তার নম্বর ট্রেস করা হতে পারে বলেও একজনের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এরপরই দোষ কবুল করেন প্রমোদ। ১৪-১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তিনি পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র বিক্রি করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে প্রমোদ জানান, তার খুড়তুতো ভাই, জামাইবাবু, মনু পণ্ডিত, গৌরব, আশিস পালিওয়ালের সঙ্গে যাঁরা ঝাঁসি মামলায় ওয়ান্টেড, তাঁরাই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যবস্থা করতেন।
২০২২ সালে বিমান বাহিনী থেকে তার বরখাস্তের কথাও স্বীকার করেন প্রমোদ। স্বীকার করেন আইডি কার্ড জালিয়াতির কথাও। বেনারস থেকে অখিলেশ যাদব এবং লখনউয়ের রাহুল এই আইডি তাকে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রমোদ।
২০১৭ সাল থেকে এই কাজ করছেন প্রমোদ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, মনু পণ্ডিত আর তিনি ছোটবেলার বন্ধু। একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নফাঁসের সঙ্গেও তারা যুক্ত। ইউপি ফরেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসও তারাই করেছিলেন।