গুরুমূর্তির ব্যাখ্যা,’১৯৩৭ সালের আইন জনসাধারণের প্রয়োজনের স্বার্থে জারি করা হয়নি। বরং তা করা হয়েছিল ইসলাম ধর্মকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। ১৯৫৬ সালের হিন্দু কোড এবং ১৯৩৭ সালের শরিয়ত কোডের পার্থক্য হল, দ্বিতীয়টি ধর্মকে আইন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিল। কিন্তু অন্য দিকে আবার সমকালীন সময়োপযোগিতার সঙ্গে ধর্মকে পরিবর্তন করার জন্য হিন্দু কোড তৈরি করা হয়েছিল।’ এছাড়াও তাঁকে ইউসিসি প্রসঙ্গে বেশ কিছু প্রশ্নও করা হয়েছিল। সেই সব প্রশ্নের উত্তরে গুরুমূর্তি কী বললেন, সেটাই দেখে নেওয়া যাক।
advertisement
প্রশ্ন: ইতিমধ্যেই আপনি ইউসিসি সংক্রান্ত দু’টি দারুন প্রবন্ধ লিখেছেন। প্রথমেই জেনে নেব ইউসিসি-র ভিত্তি ঠিক কী?
উত্তর: দেখুন, বর্তমানে ইউসিসি নিয়ে বিতর্ক চলছে। অথচ ‘কেন এই ইউসিসি’- সেই পটভূমি ছাড়াই এই বিতর্ক হচ্ছে। বিশেষ করে সাংবিধানিক ভারতে একটি আইন প্রণয়ন ক্ষমতাকে কেন সেই উচ্চতর গুরুত্ব হচ্ছে। এটি তো যে কোনও পার্লামেন্ট-ইউনাইটেড সিভিল কোডের আইন প্রণয়নের ক্ষমতারই অংশ। কিন্তু বিধানসভায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের কি কোনও প্রয়োজন আছে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে বিভ্রান্তি আর থাকবে না। ইউসিসি কোনও পরিষ্কার স্লেটে লেখা বিষয় নয়। এটি পাশ করার মতোও নয়। এর আগে তো আইন প্রণয়নও হয়নি। পুরোটাই ছিল অভ্যাস। আর অঞ্চল, গোষ্ঠী নির্বিশেষে এই অভ্যাস বদলে যেতে থাকে।
প্রশ্ন: আপনি আরও লিখেছেন যে, ইউসিসি-র প্রণেতাদের মধ্যে অন্যতম হলেন স্বয়ং বিআর আম্বেদকর। যাঁরা আজ বলছেন যে, গণতন্ত্রকে বাঁচাতেই হবে, তাঁরাও ইউসিসি-র বিরোধিতা করছেন?
উত্তর: ইউসিসি-র বিরোধিতার বিষয়টি দুভাবে দেখা যেতে পারে। প্রথমত বলি, যাঁরা বিরোধিতা করছেন, তাঁরা আসলে নিরক্ষর। আমি একটা তর্ক-বিতর্কের জন্য তাঁদের চ্যালেঞ্জ জানাতেই পারি। আর দ্বিতীয়ত, ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির কারণে ভুল আইনের কোনও বৈধতা নেই। তাই প্রতিযোগিতামূলক ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির ক্ষেত্রে এটা এখন খুবই প্রয়োজনীয়। ইউসিসির বিরোধিতা করে আসলে তাঁরা একটি অন্যায় চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রশ্ন: যদি তা-ই হয়, তাহলে কেউ এই বিষয়ে কথা বলছে না কেন? শাসক দল কখনওই এই বিষয়টা তুলে ধরেননি!
উত্তর: বিজেপি জনসমক্ষে এই বিষয়গুলি তুলে না ধরে বরং নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ এই বিষয়গুলি তো আর ২০০০ বছর আগে ঘটেনি। আপনারা কেউই ইতিহাস আরও এক বার লিখতে পারবেন না। এটা আসলে একটা শত্রু দেশের জন্ম দিয়েছে, যা ভারতের জন্য স্থায়ী সমস্যার সৃষ্টি করছে।