প্রায় এক শতাব্দীর ইতিহাস জড়িয়ে ভারতের রেল বাজেটের সঙ্গে। ১৯২৪ সালে উইলিয়াম এ্যাকওয়ার্থের নেতৃত্বে প্রথম ব্রিটিশ রেলের বাজেট পেশ করে দশ জনের একটি কমিটি। তারপর থেকে ৯২ বছর ধরে চলে আসছে আলাদা ভাবে রেল বাজেট পেশের পরম্পরা। এবার তাতে ছেদ পড়ছে। যদিও, তাতে রেলের স্বায়ত্বশাসনে কোনও হাত পড়বে না।
আর্থিক বাজেট ও রেল বাজেটের সংযুক্তিকরণ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুও বলেন, ‘এতে রেলের স্বশাসনে কোনও প্রভাব পড়বে না ৷ রেলওয়ে বোর্ড পৃথক সত্ত্বা নিয়েই কাজ করবে ৷’
advertisement
কেন এক সময়ে দুই বাজেট?
প্রথমে ভারতীয় রেলের পরিকাঠামো গড়ে তোলাই লক্ষ্য ছিল। ফলে, রেল বাজেটের পরিমাণ সাধারণ বাজেটের থেকেও বেশি ছিল। কিন্তু, এখন তার প্রয়োজন নেই।
মোদির ইচ্ছা মতো, এক দেশ-এক ভোটের পথে এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই লক্ষ্যেই এবার এক দেশ-এক বাজেট তত্ত্ব বিজেপির।
১৯৯৬ সাল থেকে বিভিন্ন রেলমন্ত্রী প্রকল্প বিতরণ করে নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, এখন বিজেপির ওপর শরিকি চাপ নেই। তাই নীতি আয়োগের দুই সদস্য বিবেক দেবরায় ও কিশোর দেশাইকে নিয়ে গঠিত কমিটির রিপোর্ট মেনে নিয়েছে কেন্দ্র।
দুটি বাজেট এক হলে, বাজেট সেশন এগিয়ে ২৫ জানুয়ারির পর হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বাজেট সেশন ফেব্রুয়ারি থেকে এগিয়ে জানুয়ারির শেষে করার সিদ্ধান্তে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে সংসদের হাতেও বাজেট আলোচনার জন্য অনেক সময় থাকবে। এর ফলে, পরিকল্পনা খাতে খরচ ও করও ১ এপ্রিল থেকে চালু করা যাবে। আগামী বছর থেকে রেলের খাতায় পরিকল্পনা ও পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে খরচের বিভাজন আর থাকছে না।
তবে এক্ষেত্রে একাধিক অসুবিধার কথাও উঠে আসছে। নতুন ট্রেন ও রেলপথ ঘোষণার ক্ষেত্রে এখন থেকে অর্থমন্ত্রকের গ্রিন সিগন্যালের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে। টিকিটে ছাড়ের ক্ষেত্রে যতটা সুবিধা বর্তমানে মেলে ততটা থাকবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বাজেটের বাইরেও বিনিয়োগ ও পেনশন ফান্ড থেকে রেলের অর্থের যোগান হয়। সেক্ষেত্রে ধাক্কা খেতে পারে ওই চিরাচরিত প্রথা।
ব্রিটিশ আমলের নিয়ম ভেঙে এবার নতুন পথে চলতে শুরু করবে ভারতীয় রেল। এবার তার গতির দিকে তাকিয়ে সাধারণ মানুষ।