গত ১৭ এপ্রিল আচমকাই দিল্লি পৌঁছন মুকুল রায়৷ তাঁর এই দিল্লি যাত্রা নিয়ে তৈরি হয় রহস্য এবং রাজনৈতিক চাপানউতোর৷ কারণ মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায় দাবি করেন, তাঁকে এবং বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়েই দিল্লি গিয়েছেন মুকুল৷ শুভ্রাংশু অভিযোগ করেন, অসুস্থ মুকুলকে ভুল বুঝিয়ে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ এর পিছনে বিজেপি-র চক্রান্তের দিকেই ইঙ্গিত করেন তিনি৷
advertisement
আরও পড়ুন: খাওয়া ঘুম নেই, ইডি-র জেরায় কেঁদে ভাসাচ্ছেন সুকন্যা! জোড়া আবদার অনুব্রত কন্যার
এ দিকে মুকুলের দিল্লি যাত্রায় অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল, বিজেপি দু দলই৷ কারণ, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েও দিল্লিতে গিয়ে মুকুল দাবি করেন, তিনি বিজেপি-তেই রয়েছেন৷ দিল্লিতে যে বিজেপি নেতাদের সঙ্গেই দেখা করতে গিয়েছেন, তাও বুঝিয়ে দেন মুকুল৷ ফলে তাঁকে নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে থাকে তৃণমূলের অন্দরে৷
আরও পড়ুন: গল্পের মতোই 'নিখোঁজ' বাস্তবের মুকুল! ফেলুদার মতো খুঁজে আনতে দিল্লি গেল পুলিশ
দিল্লি যাত্রার দ্বিতীয় দিন সংবাদমমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুকুল৷ এর পর যে হোটেলে তিনি উঠেছিলেন, সেই হোটেল ছেড়ে গোপন কোনও ঠিকানায় ঘাঁটি গাড়েন প্রবীণ এই নেতা৷ যদিও প্রথম থেকেই খবর ছিল, মুকুলের সঙ্গে অনাগ্রহী বিজেপি-র শীর্ষ নেতারা৷ রাজ্য বিজেপি-র পক্ষ থেকেও মুকুলকে নিয়ে তীব্র আপত্তির কথা জানানো হয় শীর্ষ নেতৃত্বকে৷ দিল্লি গিয়ে মুকুলের মুখে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কথা শোনা গিয়েছিল৷ যদিও গত প্রায় দু সপ্তাহ বিজেপি নেতারা সাড়়া না দেওয়ায় এক রকম আতান্তরে পড়েন মুকুল৷ সূত্রের খবর, অমিত শাহ অথবা জে পি নাড্ডা কেউই মুকুলের বিষয়ে অথবা তাঁকে দলে ফেরাতে আগ্রহী ছিলেন না৷
দিল্লি থেকে খালি হাতে ফেরায় মুকুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যতই কার্যত সংশয়ের মুখে পড়ে গেল কি না, সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ কারণ মুকুলকে নিয়ে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে শাসক দলের অন্দরে৷ দিল্লিতে গিয়েও রাজ্য সরকার এবং শাসক দলের সমালোচনা শোনা গিয়েছে মুকুলের মুখে৷ শোনা গিয়েছে রাজ্যে পরিবর্তন আনার কথা৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ইতিমধ্যে মুকুলকে নিয়ে তাঁর বিরক্তি স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ ফলে দিল্লিতে যেমন বিজেপি নেতারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, তেমন রাজ্যেও শাসক দলের দরজা আপাতত মুকুলের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের৷