২৩ বছরের সঙ্গীতা ফাটকরের প্রসব যন্ত্রণা ওঠে শুক্রবার রাতে। পরিবারের লোকজন স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি ও আশা সেবিকাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২ জুলাই ওই মহিলার ডেলিভারির কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই তাঁর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। এর পরই ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও আশা সেবিকা কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে গ্রামে পৌঁছন। গত কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে মেঠো পথ আরও বিপদসঙ্কুল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এদিকে মহিলা প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। গ্রাম ও পরিবারের লোকজন ঠিক করেন, মহিলাকে স্থানীয় রাধানগরীর জঙ্গল পেরিয়ে পাকা রাস্তা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। তার পর সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসপাতাল। এর পরই ওই মহিলাকে ঝুড়িতে বসিয়ে দুটি বাঁশের সাহায্যে কাঁধে চাপিয়ে রওনা দেন পরিবারের লোকজন। সঙ্গে ছিলেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও আশা সেবিকা।
advertisement
জঙ্গলের রাস্তা ধরে এগোনোর সময়ই সঙ্গীতা নামের ওই মহিলার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। বাধ্য হয়ে অঙ্গনওয়াড়ি ও আশাকর্মী জঙ্গলের ভিতরেই ওই মহিলার সন্তান জন্ম দেওয়ার তোড়জোর শুরু করেন। একে মুষলধারায় বৃষ্টি। তার উপর কাঁচা, কাদা-জলে ভরা রাস্তা, তাও আবার জঙ্গলের পথ। তবে এসব প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেই ঝোঁপের আড়ালে নিয়ে ওই মহিলার সন্তানের ডেলিভারির প্রস্তুতি শুরু করেন অঙ্গনওয়াড়ি ও আশা কর্মীরা। ওই মহিলা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তার পর মা ও সন্তানকে বৃষ্টির মধ্যেই আবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছু সময় পর আবার মা ও সন্তানকে আবার একইভাবে ঝুড়িতে বসিয়ে বাঁশের মাধ্যমে চড়াই-উতরাই রাস্তা পেরিয়ে পাকা সড়কে আনা হয়। তার পর সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়। জানা গিয়েছে, মা ও সন্তান, দুজনেই সুস্থ রয়েছেন। ওই গ্রামে ২০০-র বেশি মানুষের বাস। রাস্তা নেই, পানীয় জলের অভাব দীর্ঘদিনের। প্রতি বছরই বর্ষার সময় ভোগান্তির শেষ থাকে না। সব জেনে, দেখেও প্রশাসন বছরের পর বছর ধরে নিরব দর্শক।