চার্নি রোড হস্টেল হত্যাকাণ্ডের দুদিন পরে আরও একটি ঘটনা কাঁপিয়ে দিয়েছে গোটা মুম্বই। গত ৩ বছর ধরে গীতানগর ফেজ ৭-এ গীতা আকাশদীপ বিল্ডিংয়ের জে উইং-এর ৭০৪ নম্বর ফ্ল্যাটে বছর ছত্রিশের সরস্বতী বৈদ্যের সঙ্গে লিভ-ইন করছিলেন ছাপ্পান্ন বছরের মনোজ সাহানি। মনোজ কয়েকদিন ধরেই সন্দেহ করছিলেন সরস্বতীর সঙ্গে অন্য কোনও পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে৷ এ নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত৷ যেই ঝগড়া চরমে পৌঁছয় গত রবিবার৷
advertisement
আরও পড়ুন: কলকাতা থেকে দিল্লি উড়ে গেল মোদিকে পাঠানো মমতার ‘বিশেষ’ উপহার! জানেন কী ছিল বাক্সে?
পুলিশের ধারণা, গত রবিবার লিভ ইন পার্টনার সরস্বতীকে খুন করে মনোজ৷ তারপর করাত দিয়ে প্রেমিকার দেহ টুকরো টুকরো করে কাটে৷ অভিযোগ, তার পরে সরস্বতীর দেহাংশ প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করে পাড়ার কুকুরদের খাইয়ে দেয় সে৷
পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি গত কয়েকদিন ধরে মনোজকে পাড়ার কুকুরদের খাওয়াতে দেখেছিলেন তাঁর পাড়ার লোকজন৷ সেই কথা শুনেই পুলিশের সন্দেহ গাঢ় হয়৷ তারপরে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরয় আসল সত্য৷ অভিযুক্তের ফ্ল্যাট থেকে নিহত মহিলার শুধু একটি পা উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ উদ্ধার হয়েছে লাশ কাটার করাতও৷
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভবনের বাসিন্দারা নয়ানগর থানায় অভিযোগ করেন যে, ৭০৪ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে অত্যন্ত দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। সেই খবর পেয়ে, পুলিশ মীরা রোডের ওই অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছলে দরজা খুলে দেন মনোজ সাহনি। পুলিশকে দেখে পালানোর চেষ্টা করলেও উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় ধরা পড়ে যান। পুলিশ ফ্ল্যাটে ঢুকে নিহতের শরীর ও পায়ে ১২ থেকে ১৩টি টুকরো দেখতে পায়। অভিযুক্ত গত দু-তিন দিন ধরে শরীরের কিছু অংশ নষ্ট করে ফেলেছে বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, মৃতদেহের টুকরোগুলো কুকারে সেদ্ধ করে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখছিল মনোজ। তারপর তা খাইয়ে দিচ্ছিল পথকুকুরদের৷ ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (জোন ১) জয়ন্ত বাজবেলে বলেন, “আমরা সাহানিকে গ্রেফতার করেছি এবং হত্যার পিছনে কী উদ্দেশ্য ছিল এবং কীভাবে সে এটি করেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে, যে মনোজ সাহানির মধ্যে কোনও অনুশোচনার লক্ষণ দেখা যায়নি।
পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে হত্যা এবং প্রমাণ ধ্বংস করার অধীনে অভিযোগ দায়ের করেছে৷ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে নমুনা এবং প্রমাণ সংগ্রহের জন্য একটি ফরেন্সিক দলকে ডাকা হয়েছিল। অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দারা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই যুগল অন্য কারও সঙ্গে তেমন মেলামেশা করত না।