ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ভারতীয় নাগরিকদের গোপন তথ্যে আড়ি পাতছে, এই বিষয়ে কী অবগত ছিল কেন্দ্র ? উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, আইন মোতাবেক, সুরক্ষার খাতিরে কোনও নির্দিষ্ট এজেন্সি যে কোনও কম্পিউটারের যে-কোনও তথ্য মনিটর ও ডিক্রিপ্ট করতে পারে।
হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারি নিয়ে এরআগে বিস্ফোরক হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানান, '' ইজরায়েলি সংস্থাকে ব্যবহার করছে কেন্দ্র, গোপন তথ্য পেতে আড়ি পাতা হচ্ছে, বিস্ফোরক অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ''রাজনীতিক, বিচারপতি, সাংবাদিকদের উপর নজর! আগে ল্যান্ড ফোন, মোবাইলে নজরদারি হত, এখন হোয়াটসঅ্যাপও নিরাপদ নয়। কেন্দ্রই এসব করাচ্ছে। আমার ফোনে আড়ি পাতা হয়।''
advertisement
হোয়াইট অ্যাপের তথ্য অন্য কারোর পড়ার সুযোগ নেই। এন্ড টু এন্ড এনস্ক্রিপশনে সুরক্ষিত যাবতীয় তথ্য। এতদিনের সেই মিথ ভেঙে গেল। ইজরায়েলি পেগাসাস চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল, তথ্য প্রযুক্তির দুনিয়ায় তথ্য সুরক্ষার কোনও বালাই নেই। লখিন্দরের বাসরঘরে ছিদ্র দিয়ে সাপ ঢোকার সেই গল্প। তথ্য-প্রযুক্তির দুনিয়াতেই তেমনই একটা না একটা ছিদ্র থাকবেই। সেই ছিদ্র গলেই ঢুকে পড়ে পেগাসাসের মতো ভাইরাস।
ভারতের বেশ কিছু রাজনীতিক, মানবাধিকার কর্মীর হোয়াটস অ্যাপে নজরদারি করে তথ্য চুরির ঘটনায় তোলপাড়। হোয়াটসঅ্যাপের এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন যা এতদিনে দূর্ভেদ্য বলেই দাবি করা হত, সেখানে এই ঘটনা কীভাবে ঘটল?
তারআগে জেনে নিন, কী এই এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন ? সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দুপক্ষের মেসেজের তথ্য নিজস্ব সার্ভারে জমা থাকে, এই তথ্য তৃতীয় পক্ষের হাতে পড়ার কথা নয়। এতদিন ধরে এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশনের সুরক্ষা নিয়ে তেমন অভিযোগ ওঠেনি। ইজরায়েলের এক অখ্যাত স্টার্ট আপের তৈরি ভাইরাসের ধাক্কায় সেই মিথ চুরমার। হোয়াটস অ্যাপও তা মেনে নিচ্ছে।
গ্রাহকের অজান্তেই হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকতে পারে পেগাগাস, তথ্য কপি করে অন্য ডিভাইসে পাঠাতেও পারে। কীভাবে সেটা সম্ভব? সম্ভব, প্রয়োজন শুধু লেমন জেলি। তবে এই জেলি খাওয়ার জন্য নয়।
লেমন জেলি একটি শক্তিশালী ম্যালওয়্যার। এই লেমন জেলিই পেগাসাসকে পরোক্ষে চালায়।মেসেজের পাশাপাশি ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, পিকচার ফোল্ডারও কপি করে।জিপিএস ও লাইভ ট্র্যাকিংয়েও নজরদারি করা সম্ভব, একই সময়ে একাধিক ডিভাইসে নজরদারিও চলে
অর্থাৎ কোনও গ্রাহক নিজের মোবাইল যদি বাড়ি বা অফিসের ওয়াই ফাইয়ের সঙ্গে যুক্ত করেন, তবে পুরোটাই পিগাসাসের নজরে চলে আসবে। ব্যক্তিগত বার্তা, তথ্য নিরাপত্তার কোনও বালাই-ই নেই।
১৫ দিন বা একমাস অন্তর হোয়াটস অ্যাপ ডিলিট করে নতুন করে ডাউনলোড করা প্রয়োজন। ফেসবুক টুইটার বা ব্যাঙ্কিং অ্যাপেরও ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি নিতে হবে। থার্ড পার্টি ব্রাউজারেও তেমনভাবে সক্রিয় হতে পারে না পিগাসাস