পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ওই দিনই স্বামীর দেহ লোপাট করতে মুসকান নিজেই মেরঠ শহরের একটি দোকানে গিয়ে একটি বড়সড় ড্রাম কিনেছিল মুসকান৷ দরদাম না করেই দোকানদারের দাবি মতো ১১০০ টাকা দিয়ে দেয় সে৷ তদন্তে নেমে সেই ড্রাম বিক্রেতাকেও চিহ্নিত করেছে পুলিশ৷ ওই বিক্রেতাও স্বীকার করেছেন, মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে এক মহিলা এসে তার থেকে ১১০০ টাকা দিয়ে একটি বড় ড্রাম কিনে নিয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু সেই ড্রামেই যে কারও দেহ টুকরো টুকরো করে ভরে রাখা হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি ওই ব্যবসায়ী৷
advertisement
গত ৪ মার্চ মুসকান তার প্রেমিক সাহিলের সঙ্গে মিলে নিজের স্বামী সৌরভ রাজপুতকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে৷ এর পর বাজার থেকে প্লাস্টিকের ড্রাম এবং মাংস কাটার ছুরি কিনে নিয়ে আসে দু জনে৷ সেই ছুরি দিয়েই সৌরভের দেহের অন্তত ১৫ টুকরো করা হয়৷ তার পর সেই দেহাংশগুলি ড্রামে ভরে সিমেন্ট দিয়ে সিল করে দেয় সাহিল এবং মুসকান৷ হত্যাকাণ্ডের কথা জানাজানি হওয়ার পর ড্রিল মেশিন এনে ওই সিমেন্টের আস্তরণ কেটে ড্রামের ভিতর থেকে সৌরভ রাজপুতের দেহাংশ উদ্ধার করে পুলিশ৷
২০১৬ সালে প্রেম করেই মুসকান নামে ওই তরুণীকে বিয়ে করেন৷ নববিবাহিতা স্ত্রীকে সময় দিতে মার্চেন্ট নেভির চাকরিও ছেড়ে দেন তিনি৷ এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয় সৌরভের পরিবার৷ স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে চলে আসেন সৌরভ৷ ২০১৯ সালে একটি কন্যাসন্তান হয় তাঁদের৷ মেয়ে হওয়ার পরই সৌরভ জানতে পারেন, তাঁর নিজের বন্ধু সাহিলের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী৷ এর পর থেকেই ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হয়৷ অশান্তির জেরে ফের ২০২৩ সালে মার্চেন্ট নেভির চাকরিতে যোগ দিয়ে বাইরে চলে যান সৌরভ৷
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সৌরভ এবং মুসকানের মেয়ের ৬ বছরের জন্মদিন ছিল৷ মেয়ের জন্মদিনে বাড়িতে ফেরেন সৌরভ৷ তখনই প্রেমিক সাহিলের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুনের ছক কষে সৌরভের স্ত্রী৷গত ৪ মার্চ সৌরভের খাবারের সঙ্গে প্রথমে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাঁকে খাইয়ে দেয় মুসকান৷ সৌরভ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে গলা কেটে তাঁকে খুন করে সাহিল৷ তবে তদন্তের পর পুলিশ দাবি করেছে, কয়েকমাস আগেই স্বামীকে খুনের চক্রান্ত করে ফেলেছিল মুসকান৷ সেই মতো নিজের প্রেমিক সাহিলকেও রাজি করায় সে৷ সৌরভ ফিরতেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করে দু জন মিলে৷ মুসকান এবং সাহিলকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷