পুলিশ সূত্রে খবর, সমাজকর্মী ধর্মপাল সাইনি, গোন্দওয়ানা সম্প্রদায়ের প্রধান গেলাম বোরাইয়া এবং স্থানীয় গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতেই ওই অপহৃত জওয়ানকে মুক্তি দেয় মাওবাদীরা৷ রাকেশ্বরের মুক্তির জন্য মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনা করতে ১১ জনের একটি দল গঠন করা হয়েছিল৷ তার মধ্যে সাতজন স্থানীয় সাংবাদিকও ছিলেন৷
মুক্তির পর ওই জওয়ানকে প্রথমে তারেমের একটি ক্যাম্পে নিয়ে এসে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়৷ গত শনিবার এখানেই মাওবাদীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়৷ সিআরপিএফ-এর এক আধিকারিকের দাবি, বাইরে থেকে অন্তত ওই জওয়ানের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই৷ রাতের দিকে তাঁকে রায়পুরে নিয়ে যাওয়া হবে৷ ওই জওয়ানের মুক্তির আগেই স্থানীয় পুলিশ কর্তারাও দাবি করেছিলেন, রাকেশ্বরের মুক্তির জন্য সবরকম চেষ্টা চলছে৷ ইতিবাচক ফলের আশাই করা হচ্ছে৷
advertisement
গত সোমবার হঠাৎই একটি রহস্যময় নম্বর থেকে ফোন পান এক সাংবাদিক৷ তাঁকেই জানানো হয়েছিল রাকেশ্বর মাওবাদীদের হেফাজতে রয়েছেন৷ তাঁকে দু'- তিন দিনের মধ্যেই মুক্তি দেওয়া হবে৷ রাকেশ্বর মাওবাদী দমনে নিযুক্ত কোবরা বাহিনীর সদস্য ছিলেন৷
এর দু' দিন পর স্থানীয় সাংবাদিকদের রাকেশ্বরের একটি ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়৷ সেই ছবিতে দেখা গিয়েছিল, রাকেশ্বরকে একটি তাঁবুর মধ্যে রাখা হয়েছে৷ যদিও অপহৃত জওয়ানের পরিবারের দাবি ছিল ওই ছবিটি পুরনো৷ অপহৃতক জওয়ানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভও দেখায় তারা৷
বস্তারের ইন্সপেক্টর জেনারেল পি সুন্দর রাজও আশা করিছেলেন, যেহেতু মাওবাদীরা নিজেরাই ওই জওয়ানের ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছিল যে তিনি তাদের হেফাজতেই রয়েছেন, তাই মাওবাদীরা ওই জওয়ানের কোনও ক্ষতি করবে, এমন সম্ভাবনা কম ছিল৷ কারণ সেক্ষেত্রে মাওবাদীদেরই ভাবমূর্তি খারাপ হত৷ গত শনিবার বিজাপুর এবং সুকমা জেলার সীমান্তে মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির যুদ্ধ শুরু হয় সিআরপিএফ-এর কোবরা বাহিনীর৷ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দু' পক্ষের মধ্যে লড়াই চলে৷ সিআরপিএফ-এর ডিজি কুলদীপ সিং জানিয়েছিলেন, লড়াইয়ের সময় অসুস্থ বোধ করছিলেন রাকেশ্বর৷ তাঁর এক সতীর্থ জওয়ানই পরে আধিকারিকদের এ কথা জানিয়েছিলেন৷ তিনি দাবি করেছিলেন, বাকিরা মাওবাদীদের সঙ্গে গুলি বিনিময় করতে করতে এগিয়ে গেলেও এক জায়গায় বসে পড়েছিলেন রাকেশ্বর৷ সিআরপিএফ-এর ডিজি-র মতে, সম্ভবত প্রবল গরমে অসুস্থ বোধ করছিলেন রাকেশ্বর৷
সিআরপিএফ জওয়ানদের উপরে এই হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে মাডবি হিদমা নামে বছর চল্লিশের এক মাওবাদী কম্যান্ডারকেই সন্দেহ করা হচ্ছে৷ এর আগে একাধিক বড়সড় হামলার নেপথ্যে ছিল হিদমা৷ ২০১৩ তার পরিকল্পনায় হওয়া হামলার জেরেই বেশ কয়েক জন কংগ্রেস নেতা সহ ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল ছত্তীসগড়ে৷ সিআরপিএফ-এর অবশ্য দাবি, গত শনিবারের ঘটনায় মাওবাদীদেরও বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ মাওবাদীদের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়, কোবরা বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময়ে তাদের তরফে চার জন নিহত হয়৷