যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দফতরের অধীন ত্রিপুরা স্টেট এনএসএস সেলের উদ্যোগে আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত নেশা মুক্ত ত্রিপুরার উপর সেমিনার ও রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। এর পাশাপাশি মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে মাদক ব্যবসায়ী ও দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে সমাজে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা আরও বলেন, ৭০-এর দশক থেকেই ড্রাগসের মাধ্যমে ভারতবর্ষকে দুর্বল করে দেওয়ার প্রয়াস চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চক্র-সহ জাতীয় স্তরে কিছু ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবে যুব সমাজকে নেশার কবলে ঠেলে দিতে চাইছে। ড্রাগস ব্যবহারের কারণে এইচআইভি এইডস এবং হেপাটাইটিসে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। তাই এবিষয়ে সচেতন হয়ে এর বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে হবে। যে রক্ত আমাদের প্রাণ বাঁচায় সেই রক্তের মাধ্যমেই ইনজেকশন মারফতে ড্রাগস নিয়ে জীবন শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। তাই এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী এনএসএস স্বেচ্ছাসেবীদের এগিয়ে আসার আহ্বান রাখেন।
advertisement
আরও পড়ুন: মালদহের স্কুলে বন্দুকবাজের তাণ্ডবে দিল্লির ‘চক্রান্ত’! গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন মমতা
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অসমের পরে নেশা জাতীয় দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করার বিরুদ্ধে অভিযানে ত্রিপুরা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।’ জনসাধারণকে মাদক ব্যবসায়ী এবং দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করার আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অপরাধীদের চিহ্নিত করতে হবে যারা সমাজকে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করছে। স্কুল-কলেজে এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে হবে যারা মাদক বিক্রি করছে, সমাজকে কলুষিত করছে। কিন্তু লক্ষ্য করা যায় এসব বদ লোকদের ভয়ের কারণে অনেকে তাঁদের নাম উল্লেখ করতে চায় না। তবে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। তাই সমাজের বিনষ্টকারী ও মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে। তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা পুলিশকে ড্রাগসের কিংপিনদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: অনুব্রত ছাড়া বীরভূম সামলাবে কে? চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বিরাট ঘোষণা মমতার! কেঁপে গেল বাংলা
এর পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় প্রশংসনীয় ভূমিকার জন্য এনএসএস স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকারও প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যে কোনও দুর্যোগের সময় এনএসএস ইউনিট সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। রক্তদান সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা জানান, ‘রক্ত হচ্ছে এমন একটি উপহার যা ঈশ্বর মানুষকে সৃষ্টি করার সময় শরীরে দিয়ে দেন। যার দ্বারা একজন মানুষ অন্যজনের প্রাণ বাঁচাতে পারেন। বস্ত্রদান, চক্ষুদান, মরণোত্তর দেহদান, শিক্ষাদান ইত্যাদি করা যায়। কিন্তু রক্তদান হচ্ছে এর মধ্যে অন্যতম একটি মহৎ দান।’ এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দফতরের মন্ত্রী টিংকু রায়, সচিব প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, অধিকর্তা সত্যব্রত নাথ, ত্রিপুরা স্টেট এনএসএস সেলের আধিকারিক এসোসিয়েট প্রফেসর ড: চিত্রজিত ভৌমিক-সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।
আবীর ঘোষাল