নয়াদিল্লি: বিরোধীদের তোলা ‘ভোট চুরির’ অভিযোগের মধ্যে, বিরোধী দলগুলি সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনতে পারে বলে সোমবার একাধিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সৈয়দ নাসির হুসেনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে, দল প্রয়োজনে অভিশংসন প্রস্তাব সহ সকল গণতান্ত্রিক উপায় ব্যবহার করতে প্রস্তুত, যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।
advertisement
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র মুখ্য নির্বাচনী কমিশনারকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ”২০২৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীই প্রথম ডুপ্লিকেট এপিক কার্ড ইস্যু তুলেছিলেন। আমরা পাঁচটি চিঠি দিয়েছি। জুন মাসে তাঁদের দেওয়া সময়ই শেষ হচ্ছে। আপনি দয়া করে আপনার রাজনৈতিক গুরুদের হাতে ছেড়ে দিন।”
মহুয়ার কথায়, ”আপনি কি বলতে চাইছেন, আগের নির্বাচনগুলিতে মৃত ভোটাররা লিস্টে ছিলেন? যদি সেটাই হয় তাহলে প্রাক্তন সব নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। লোকসভা অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে। আপনারা বলছেন, শপথ নিতে। আপনাদের দেওয়া তথ্যে আমরা শপথ নেব? আমরা অথেন্টিকেট করব? আপনারা মিথ্যা বলছেন। সর্বোচ্চ আদালতকে ভুল কোট করছেন আপনি।”
প্রসঙ্গত, রবিবারই জ্ঞানেশ কুমার কংগ্রেস নেতা তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি এবং অন্যান্য বিরোধী নেতাদের উত্থাপিত ‘ভোট চুরির’ অভিযোগ বাতিল করে দিয়েছেন সংবিধানের বিধান এবং নির্বাচনী আইনের ধারাগুলি উদ্ধৃত করে। তিনি রাহুল গান্ধির অভিযোগগুলিকে ভারতের সংবিধানের ‘অপমান‘ বলে অভিহিত করেছেন। রাহুল গান্ধিকে তার মন্তব্যের জন্য স্বাক্ষরিত হলফনামা জমা দিতে অথবা জাতির কাছে ক্ষমা চাইতেও বলেছেন।
পরে, রাহুল গান্ধি পাল্টা কমিশনকে আক্রমণ করে অভিযোগ করেন যে নির্বাচন কমিশন তার কাছ থেকে হলফনামা চাইছে কিন্তু বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর যখন একই অভিযোগ করেন তখন তা করেন না। তাঁর কথায়, “নির্বাচন কমিশন আমার কাছ থেকে হলফনামা চায়। কিন্তু যখন অনুরাগ ঠাকুর আমি যা বলছি, সেই একই কথা বলেন, তখন নির্বাচন কমিশন তার কাছ থেকে হলফনামা চায় না।”
প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৩২৪(৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সরানো যায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মতো একই প্রক্রিয়ায়। অর্থাৎ সংসদে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব পাস করাতে হয়। অর্থাৎ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে ইমপিচ করতে হলে সংসদের দুই কক্ষেই দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাগবে। যদিও সেই সংখ্যা বিরোধীদের নেই। কংগ্রেস নেতা ইমরান প্রতাপগড়ী বলেন,”আমরা দ্রুত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” অর্থাৎ, দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সরাতে এবার ইমপিচমেন্টের পথে হাঁটতে চলেছেন বিরোধীরা।