দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণ এবং ফরিদাবাদ সন্ত্রাসচক্রের যোগসূত্রে নতুন এক ভয়ানক চিত্র উঠে এসেছে। শিক্ষিত পেশাজীবীদের মধ্যে বাড়ছে উগ্র মতাদর্শের প্রভাব — আর সেই প্রেক্ষিতেই এখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলির নজরের কেন্দ্রে ড. শাহীনা সঈদ, উত্তরপ্রদেশের এক চিকিৎসক, যিনি ফরিদাবাদ জঙ্গি মডিউলের অর্থায়নে মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
তিন ঘণ্টার অপেক্ষা! বিস্ফোরণের আগে লালকেল্লার পাশে ড. উমরের ভয়ানক কাউন্টডাউন ধরা পড়ল সিসিটিভিতে
advertisement
তদন্তের কেন্দ্রে মহিলা চিকিৎসক ড. শাহীনা সঈদ
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, শাহীনা দীর্ঘদিন ধরেই জইশ-ই-মহম্মদ (JeM)-এর সক্রিয় সমর্থক এবং ভারতে সংগঠনের নারী শাখা গঠনের উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি চিকিৎসক হিসেবে নিজের পেশাগত মর্যাদা ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের আড়াল তৈরি করেছিলেন।
তদন্তে উঠে এসেছে, শাহীনা ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন ড. উমর মহম্মদ ও মুজাম্মিল শাকিল-এর সঙ্গে — দু’জনেই ইতিমধ্যেই ধৃত জঙ্গি। মুজাম্মিলের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কও ছিল বলে সূত্রে জানা গেছে, যা তাঁকে সরাসরি মূল পরিকল্পনা দলের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে।
অর্থায়নের রহস্য: তহবিলের উৎস ও ছদ্মবেশ
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের আগে গোষ্ঠীটি প্রায় ৩৫–৪০ লক্ষ টাকা জোগাড় করেছিল। এই অর্থের বড় অংশই এসেছে শাহীনার যোগাযোগ সূত্র থেকে।
তিনি মেডিক্যাল ওয়েলফেয়ার ও এনজিও প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করতেন।
সেই সংগঠনগুলিই পরবর্তীতে এনক্রিপটেড কমিউনিকেশন চ্যানেল ও অবৈধ ফান্ড ট্রান্সফার রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রবাহী গাড়িটির নিবন্ধন শাহীনার নামেই ছিল, যা তাঁর সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রমাণ করে।
এক সিনিয়র গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন,
“ড. শাহীনা তাঁর চিকিৎসক পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন। মেডিক্যাল মিশন আর এনজিওর নামে অর্থ পাচার চালাতেন। এটি একদম textbook infiltration।”
‘আল-ফালাহ নেটওয়ার্ক’: শিক্ষার আড়ালে র্যাডিকাল ঘাঁটি
তদন্তে আরও জানা গেছে, ফরিদাবাদের আল-ফালাহ মেডিক্যাল কলেজ ছিল এই মডিউলের প্রাথমিক র্যাডিকালাইজেশন ও নিয়োগ কেন্দ্র।
উমর, শাহীনা ও মুজাম্মিল— তিনজনই সেখানেই পড়াশোনা করেছেন। গোয়েন্দারা বলছেন, কলেজ ও সংশ্লিষ্ট ওয়েলফেয়ার সংস্থাগুলির মাধ্যমে উগ্র মতাদর্শ ছড়ানোর কাজ চলত বহু বছর ধরে।
নিরাপত্তা সংস্থার উদ্বেগ: শিক্ষিত পেশাজীবীদের উগ্রতা বাড়ছে
তদন্ত যত গভীরে যাচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে এক ভয়াবহ সত্য —
ভারতের শহুরে মধ্যবিত্ত ও শিক্ষিত সমাজের ভেতরেও উগ্র মতাদর্শের শিকড় গেড়ে বসছে। একজন মহিলা চিকিৎসক, যার সামাজিক প্রভাব ছিল বিস্তর, যদি একটি জঙ্গি মডিউলের অর্থদাতা হতে পারেন, তাহলে এটি কেবল আইনশৃঙ্খলার নয়, সমাজের মূল্যবোধেরও বড় চ্যালেঞ্জ।
এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন,
“এই ধরনের শিক্ষিত মুখগুলোই সবচেয়ে বিপজ্জনক— কারণ তারা সন্দেহহীন, গ্রহণযোগ্য, আর সমাজে প্রভাবশালী।”
