এক ঘণ্টার সাক্ষাৎকারে জয়ললিতা জানিয়েছিলেন, যেকোনও সাধারণ মানুষের মতো তার মধ্যেও দুঃখ, রাগ, হতাশা, অভিমান, আনন্দ সমস্ত ভাবনা রয়েছে ৷ কিন্তু জনসাধারণের নেতা হওয়ার কারণে তিনি সবসময় সেই ভাবনাগুলিকে আটকে রাখার চেষ্টা করে থাকেন ৷
তিনি আরও জানান যে নিজের জীবনে তিনি একজন লাজুক প্রকৃতির মানুষ ৷ নিজের মতো থাকতেই তিনি বেশি ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন ৷ প্রকাশ্যে নিজের ভাবনা প্রকাশ করতে তিনি পছন্দ করেন না ৷ রূপোলি পর্দা বা রাজনীতি ৷ বরাবরই হাই প্রোফাইল জীবন যাপন করেছেন ৷ এর জেরে সব সময়ে লাইম লাইটে থাকতে হয়েছে আম্মাকে ৷
advertisement
জয়ললিতার মা সিনেমায় কাজ করতেন ৷ টক শো-তে তিনি জানান, তার জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃখ হল যে তিনি তার মায়ের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারেননি কারণ তার মা কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ৷ কনভেন্ট স্কুলে পড়তেন তিনি ৷ সেই সময় ক্রিকেটার নরি কন্ট্রাক্টর ও বলিউডের শাম্মি কাপুরের ফ্যান ছিলেন ৷ নরি কন্ট্রাক্টরকে দেখতে মাঝেমধ্যেই তিনি টেস্ট ম্যাচ দেখতে যেতেন ৷ শাম্মি কাপুরের ‘জঙ্গলি’ আম্মার জীবনের সব সময়ের পছন্দের ছবি ৷
আম্মার পছন্দের গানের তালিকার মধ্যে রয়েছে, ‘অ্যা মালিক তেরে বন্দে হম’, ‘আজা সনম, মধুর চান্দনী মে হাম-তুম মিলে তো বিরানে মে ভি আ জায়েগি বাহার হে ৷’ তিনি আরও জানান, যে তার মা অভিনেত্রী হওয়ায় স্কুলে তাকে নিয়ে মজা করতেন তার সহপাঠীরা ৷১৬ বছর বয়সে পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতির দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তিনিও ফিল্মে কাজ করা শুরু করে দেন ৷
জয়ললিতা জানিয়েছেন, ফিল্মে কাজ করতে পছন্দ করতেন না ৷ কিন্তু যখন তিনি কোনও কাজ করবেন ঠিক করতেন তখন তিনি সফল হওয়ার সমস্ত চেষ্টা করে থাকতেন ৷ তিনি বিশ্বাস করেন যে তিনি একজন সফল জননেত্রী ৷
জয়ললিতা স্বীকার করেন জীবনে কখনও বিনা শর্তে ভালোবাসা পাননি ৷ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বা রাজনীতি ৷ দুটি জায়াগায় অত্যন্ত পুরুষতান্ত্রিক ৷
একসময় এমজি রামচন্দ্রনের নায়িকা হিসেবে একের পর এক সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করেছেন। রাজনীতিতে তিনিই জয়ললিতার গুরু। এমজিআরের হাত ধরেই এআইএডিএমকে একের পর এক ধাপ পেরিয়ে দ্রুত দলের দ্বিতীয় সবোর্চ্চ পদ দখল করেন জয়ললিতা। এমজিআরের মৃত্যু, দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, ভাঙন - সব সামলে জয়ললিতার নেতৃত্বে তামিলনাড়ুতে ক্ষমতায় ফেরে এআইএডিএমকে।
রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় লড়াই এমজি রামচন্দ্রনের মৃত্যুর পর লড়তে হয়েছে ৷ রামচন্দ্রনের মৃত্যুর পর পার্টিতে নিজের জায়গা বানাতে অত্যন্ত সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাঁকে ৷ তিনি আরও জানিয়েছেন যে তিনি যদি ডাক্তার বা শিক্ষক হতেন তাহলে তার সম্বন্ধে যে সব অপমানজনক ও কুরুচিকর গুজব বা মন্তব্য করা হয়েছে তা হয়তো হত না ৷ পাশাপাশি তিনি এটাও স্বীকার করেছেন তার সবচেয়ে বেশি বিরোধী পুরুষ নয়, বরং মহিলারাই ছিলেন ৷
