নিজের এই দাবির পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে চিনের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের বহু চর্চিত ৯-৯-৬ মডেলের উদাহরণ দিয়েছেন নারায় ণমূর্তি৷ তাঁর দাবি, উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেশের বৃদ্ধির হারে গতি আনতে চিনের পথেই হাঁটা উচিত ভারতের৷
২০২৩ সালে নারায়ণ মূর্তি দাবি করেন, দেশ গঠনের জন্য ভারতের তরুণ প্রজন্মের সপ্তাহে অন্তত ৭২ ঘণ্টা কাজ করা উচিত৷ গত কয়েক দশকে চিনের শিল্প এবং আর্থিক ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় হারে বৃদ্ধি ঘটেছে৷ চিনের বৃদ্ধি হারকে মানদণ্ড হিসেবে ধরে এগনোর চেষ্টা করছে অনেক দেশও৷
advertisement
সম্প্রতি একটি বেসরকারি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নারায়ণ মূর্তি সেই চিনকেই অনুসরণ করার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ তিনি বলেন, চিনে ৯-৯-৬ ব্যবস্থার কথা বলা হয়৷ এর অর্থ জানেন? সপ্তাহে ছ দিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ৷ এই হিসেবে কাজ করলে সপ্তাহে ৭২ ঘণ্টা কাজ করা সম্ভব৷ ইনফোসিস প্রতিষ্ঠাতার আরও পরামর্শ, কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য নিয়ে ভাবার আগে তরুণ প্রজন্মের নিজেদের কেরিয়ার নিয়ে ভাবা উচিত৷ তাঁর কথায়, আগে নিজেদের জীবন তৈরি করুন, তার পর কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভাবা যাবে৷
চিনের ৯-৯-৬ মডেল কী?
চিনের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে একসময় এই ৯-৯-৬ মডেল অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল৷ এই ব্যবস্থায় কর্মীদের সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা সপ্তাহে ছ দিন অফিসে কাজ করতে হত৷ সবমিলিয়ে ৭২ ঘণ্টা কাজ করতে হত কর্মীদের৷ চিনের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের বিপুল বৃদ্ধির সময় হুয়েউই এবং আলিবাবা-র মতো সংস্থাগুলিতে কাজের এই পদ্ধতি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়৷ যদিও বেশ কিছুদিন পর থেকেই কর্মীদের উপরে মানসিক চাপ এবং কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য না থাকার মতো অভিযোগ ওঠে এই ৯-৯-৬ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে৷ শেষ পর্যন্ত চিনের সুপ্রিম কোর্ট ২০২১ সালে সপ্তাহে ৭২ ঘণ্টা কাজ করানোর এই ব্যবস্থাকে অবৈধ বল ঘোষণা করে৷ তার পরেও চিনের বহু সংস্থায় এখনও এই বেআইনি নিয়মেই কর্মীদের কাজ করানো হয় বলে অভিযোগ৷
রিপাব্লিক টিভি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নায়ারণমূর্তি দাবি করেছেন, চিনের সমান আর্থিক বৃদ্ধির হার ছুঁতে গেলে ভারতীয়দেরও একই ভাবে পরিশ্রম করার জন্য তৈরি থাকতে হবে৷ নারায়ণ মূর্তি জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারতের পক্ষে চিনের বৃদ্ধির হারকেও টপকে যাওয়া সম্ভব৷ কিন্তু তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকেই বাড়তি উদ্যোগ নিতে হবে৷
নারাণমূর্তির কথায়, প্রত্যেককেই নিজের লক্ষ্যমাত্রা বাড়াতে হবে৷ অল্পে সন্তুষ্ট হলে হবে না৷ তিনি বলেন, আমাদের বুঝতে হবে যে চাকরি সহজলভ্য নয়৷ আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের জন্য রাখা মানদণ্ড আরও বাড়াতে হবে৷ সবাই মিলে সেই চেষ্টা করলেই ভারত চিনকে ছুঁতে পারবে৷
