ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ এই ঘটনাটি রেকর্ড করে। দেখা যায়, কীভাবে তপ্ত, লাল লাভা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসছে এবং আগ্নেয়গিরির চূড়া থেকে ঘন ধোঁয়ার স্রোত বেরোচ্ছে। এই দৃশ্য ব্যাপক আগ্রহ ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার উদ্রেক করেছে। ব্যারেন আইল্যান্ডের আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের মূল কারণ এর ভূতত্ত্ব, বিশেষ করে ইন্দো-অস্ট্রেলীয় এবং ইউরেশীয় (সুন্ডা) টেকটোনিক প্লেটগুলির পারস্পরিক ক্রিয়াকলাপ।
advertisement
আন্দামান-নিকোবর চূড়ান্ত অংশটি একটি ক্লাসিক সাবডাকশন জোন, যেখানে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট সুন্ডিক প্লেটের নিচে সরে গিয়ে ভূত্বকের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এই প্রক্রিয়া ভূমিকম্প সৃষ্টি করে এবং ম্যাগমা ওঠার জন্য পথ তৈরি করে।
এই ভূতাত্ত্বিক গতিশীলতার কারণে অঞ্চলটি ভূকম্পন ও আগ্নেয়গিরির দিক থেকে অত্যন্ত সক্রিয়। এখানে প্রায়শই ছোট ছোট ভূমিকম্প (মাইক্রো-সিসমিক) হয়ে থাকে, মাঝে মাঝে তীব্র কম্পন ঘটে যা আগ্নেয়গিরির অভ্যন্তরে থাকা ম্যাগমা চেম্বারকে ব্যাহত করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ব্যারেন আইল্যান্ডে সম্প্রতি যে কাঁপুনি ও ক্ষুদ্র বিস্ফোরণ দেখা গেছে, তা আগ্নেয়গিরির নিচে থাকা ম্যাগমা চেম্বারে সিসমিক সক্রিয়তা বৃদ্ধির ফল। এই অঞ্চলটি ভূমিকম্পের জন্য পরিচিত — হালকা মাইক্রো-সিসমিক থেকে মাঝারি মাত্রার ভূকম্প পর্যন্ত — যা ম্যাগমার আধার বা সংরক্ষণাগারের আশপাশের শিলাগুলিকে ফাটিয়ে দিতে পারে। যখন এসব কাঁপুনি ঘটে, তখন তা চাপমুক্তির মাধ্যমে ফাটল ধরে ম্যাগমা ও আগ্নেয় গ্যাসগুলিকে উপরের দিকে উঠে আসার সুযোগ দেয়, যার ফলে বিস্ফোরণ ঘটে এবং অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়়ুন- পরকীয়া অপরাধ নয়, কিন্তু সঙ্গীর প্রেমিকের থেকে ক্ষতিপূরণ চাওয়া যেতে পারে: হাই কোর্ট
ব্যারেন আইল্যান্ড প্রায় ৩.২ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং এটি আশপাশের সমুদ্রতল থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠেছে, যেখানে এর প্রধান শৃঙ্গ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক ৩০০ থেকে ৩৫৪ মিটার ওপরে অবস্থিত। প্রায় ১৫০ বছর নিস্ক্রিয় থাকার পর ১৯৯১ সালে এটি আবার অগ্ন্যুৎপাত ঘটায় এবং ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে কয়েকটি পর্যায়ে পুনরায় সক্রিয় হতে দেখা যায়। দ্বীপটি অত্যন্ত দূরবর্তী এবং জনবসতি না থাকায় মানুষের ওপর ঝুঁকি অনেকটাই কমে গেছে।