বর্তমানে ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি ১৪০টির মতো যুদ্ধজাহাজ, ১৭টি ডিজেল–ইলেক্ট্রিক সাবমেরিন, ২টি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন এবং প্রায় আড়াই শতাধিক বিমান ও হেলিকপ্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে বহু সাবমেরিন ও জাহাজের বয়স বেড়েছে। সেগুলো বাদ দিলে ভবিষ্যতে নতুন সংযোজনের মাধ্যমে মোট বহর ২০০ থেকে ২৩০-এ পৌঁছবে বলে আশা করছে নৌবাহিনী।
নৌবাহিনী যে সব নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ৯টি ডিজেল–ইলেক্ট্রিক সাবমেরিন (প্রজেক্ট ৭৫-আই), ৭টি আধুনিক মাল্টি–রোল স্টেলথ ফ্রিগেট, ৮টি অ্যান্টি–সাবমেরিন করভেট এবং ১২টি মাইন কাউন্টারমেজার ভেসেল। ভবিষ্যতে আরও চারটি ডেস্ট্রয়ার যুক্ত করারও পরিকল্পনা রয়েছে।
advertisement
অর্থনৈতিক দিক থেকেও নৌবাহিনীর সম্প্রসারণ বড় ভূমিকা রাখবে। একটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে বহু শিল্পে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়। পরিসংখ্যান বলছে, একটি জাহাজ নির্মাণের মাল্টিপ্লায়ার প্রভাব প্রায় ১.৮ গুণ। অর্থাৎ একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সংযুক্ত শিল্পে পাঁচ-ছ’টি কর্মসংস্থান তৈরি হয়।
চীনের ক্রমবর্ধমান সামুদ্রিক আধিপত্য এবং পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ কার্যকলাপ ভারতকে এই সম্প্রসারণ পরিকল্পনায় আরও দৃঢ় করেছে। ভারত মহাসাগরের জলে চীনের উপস্থিতি সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। ভারত মহাসাগরে একাধিক দেশেই তারা ঘাঁটি তৈরি করছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানকেও আধুনিক সাবমেরিন দিচ্ছে বেজিং। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বলেই মনে করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একটি নৌবহর রাতারাতি গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, দেশীয় সক্ষমতা এবং নিরবচ্ছিন্ন বিনিয়োগ প্রয়োজন। তাই ভারত ২০৩৫ সালকে সামনে রেখে ধাপে ধাপে এই লক্ষ্য পূরণের পথে এগোচ্ছে।