তবে বিশেষজ্ঞরা একটি বিষয়ে একমত, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় কোনও পদক্ষেপ করার মতো রসদ এবং ক্ষমতা, দুই-ই রয়েছে ভারতের৷ পাকিস্তান সিমলা চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণার পর ভারতের পথ আরও পরিষ্কার হয়েছে৷ ইন্দিরা গান্ধি যেমন বাংলাদেশকে আলাদা করে পাকিস্তানকে দু টুকরো করেছিলেন, সেরকমই পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধার করতে পারলে ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম৷
advertisement
পহেলগাঁও হামলার পরই হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেও দিয়েছেন, যে সন্ত্রাসবাদীরা পহেলগাঁওয়ে হামলা চালিয়েছে এবং যারা এর পিছনে রয়েছে, তারা কল্পনাও করতে পারছে না যে তাদের জন্য কতবড় শাস্তি অপেক্ষা করছে৷ সন্ত্রাসবাদীদের যেটুকু জমি অবিশষ্ট আছে, তাও এবার মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার সময় চলে এসেছে৷
কিন্তু সত্যিই পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করার মতো রসদ কি ভারতের হাতে আছে? একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কেন এত বড় পদক্ষেপ করার কথা চাইলেই নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি?
ভারতের হাতে এই মুহূর্তে ফরাসি স্কাল্প মিসাইল সহ রাফালের মতো যুদ্ধবিমান আছে৷ যা আকাশযুদ্ধে পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের থেকে অনেক এগিয়ে৷
ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে রয়েছে ব্রাহ্মোস সুপারসনিক মিসাইল সিস্টেম৷ এই ক্ষেপনাস্ত্র ২৯০ কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্য ২.৮ মাখ গতিতে নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম৷
ভারতের কাছে আইএনএস বিক্রান্ত এবং আইএনএস বিক্রমাদিত্যের মতো যুদ্ধবিমান পরিবহণে সক্ষম যুদ্ধজাহাজ রয়েছে৷ পাকিস্তানের হাতে এই ধরনের একটিও যুদ্ধজাহাজ নেই৷
ওসামা বিন লাদেনকে খতম করতে যে এমএইচ ৬০আর হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছিল আমেরিকা, ভারতের হাতে সেই একই ধরনের উন্নত হেলিকপ্টার রয়েছে৷ যা ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ থেকে ওড়ানো হয়৷ এছাড়াও ভারতের কাছে পিনাকা মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার রয়েছে৷
ভারতের কাছে রাশিয়ায় তৈরি এস-৪০০ ডিফেন্স সিস্টেম রয়েছে৷ যা ব্যালিস্টিক মিসাইল, যুদ্ধজাহাজ, ড্রোনকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করতে সক্ষম৷ ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই এস-৪০০০ ডিফেন্স সিস্টেম৷
সিমলা চুক্তি রদ
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সামরিক শক্তি বিচারে অনেকটাই এগিয়ে থাকলেও ভারত সত্যিই শেষ পর্যন্ত পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখলের জন্য ঝাঁপাবে কি না৷ ১৯৭১ সালে ভারত পাক যুদ্ধের পর নিয়ন্ত্রণরেখার সীমা মানতে শুরু করে দুই দেশ৷ সিমলা চুক্তি অনুযায়ী, এতদিন দু দেশের নিরাপত্তা বাহিনী সেই নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করত না৷ কিন্তু পাকিস্তান সিমলা চুক্তিকে বাতিল ঘোষণা করে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে এনেছে৷ কারণ সিমলা চুক্তি পাকিস্তান অস্বীকার করায় ভারতের সামনেও নিয়ন্ত্রণরেখাকে সম্মান জানানোর দায় নেই৷
১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়েছিল৷ কিন্তু সংযম বজায় রেখেছিল ভারত৷ কিন্তু সিমলা চুক্তির অস্তিত্ব না থাকলে ভারতীয় সেনাবাহিনী চাইলেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রবেশ করতে পারে৷ যে পথে এগিয়ে যেতে থাকলে আফগানিস্তান পর্যন্তও পৌঁছনো সম্ভব৷
যেহেতু নরেন্দ্র মোদি সরকার এবং বিজেপি দল হিসেবে বার বার পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ফেরানোর উপরে জোর দিয়েছে, তাই পহেলগাঁও হামলার পর সেই সম্ভাবনা নিয়েও জোর চর্চা শুরু হয়েছে৷