১৯৯১ ব্যাচের এই আইএএস অফিসার বর্তমানে হরিয়ানা সরকারের অতিরিক্ত পরিবহণ সচিবের পদে রয়েছেন৷ গত বছর ডিসেম্বর মাসেই এই পদে বদলি করা হয়েছিল তাঁকে৷
হরিয়ানা ক্যাডারের এই আইএএস অফিসার ২০১২ সালে প্রথমবার সংবাদ শিরোনামে আসেন৷ গুরুগ্রামে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধির জামাই এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধির স্বামী রবার্ট বঢরার একটি জমির মিউটেশন বাতিল করে দেন তিনি৷
advertisement
১৯৬৫ সালের ৩০ এপ্রিল কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন অশোক খেমকা৷ ১৯৮৮ সালে আইআইটি খড়্গপুর থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়েএপ বি টেক করেন তিনি৷ এর পর টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়েই পিএইচডি করেন তিনি৷ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ফিনান্স নিয়ে এমবিএ-ও করেন তিনি৷ চাকরিজীবনের মধ্যেই পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করেন তিনি৷
হরিয়ানা সরকারের অধীনে কাজ করা আমলাদের মধ্যে সম্ভবত অশোক খেমকাকেই সর্বোচ্চ ৫৭ বার বদলি করা হয়েছে৷ যে দফতর থেকে তিনি অবসর নিচ্ছেন, বছর দশেক আগে সেই পরিবহণ দফতরের কমিশনার পদেই ছিলেন এই আইএএস অফিসার৷ তখনও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মনোহরলাল খাট্টার৷ কিন্তু মাত্র চার মাস পরিবহণ দফতরের কমিশনার পদে থাকার পরই সেবার অশোক খেমকাকে বদলি করা হয়৷
২০২৩ সালে অশোক খেমকা নিজেই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে দুর্নীতি দমন বিভাগে কাজের সুযোগ চেয়ে অনুরোধ করেন৷ তিনি দুর্নীতিকে নির্মূল করতে চান, চিঠিতে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীকে এমনই অনুরোধ করেন এই প্রবীণ আইএএস অফিসার৷ তিনি আরও দাবি করেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েই নিজের কেরিয়ারের উন্নতির সঙ্গে আপোস করেছেন৷ চিঠিতে অশোক খেমকা
মুখ্যমন্ত্রী খাট্টারকে লেখা চিঠিতে অশোক খেমকা লেখেন, ‘কাজের দায়িত্ব ভাগে ভারসাম্য না থাকলে সাধারণ মানুষের কোনও উপকার হয় না৷ আমার চাকরি জীবনে সায়াহ্নে এসে আমি ভিজিলেন্স বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করতে চাই, যাতে আমি দুর্নীতিকে নির্মূল করতে পারি৷ যদি সুযোগ পাই, তাহলে আমি কথা দিচ্ছি দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকৃত যুদ্ধ শুরু হবে৷ তবে প্রভাবশালী বা ক্ষমতাশালী কাউকেই রেয়াত করা হবে না৷’
নিজের সতীর্থদের উদ্দেশ্যে একবার অশোক খেমকা বলেছিলেন, ‘যে গাছ সোজা হয়ে বেড়ে উঠতে চায়, সেটির ডালই আগে ছেঁটে দেওয়া হয়৷ তাতে আমার কোনও আফশোস নেই৷ আমি ঠিক টিকে থাকব৷’
গত ১২ বছর ধরে অশোক খেমকাকে তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর গোটা চাকরি জীবনেই প্রতি ছ মাস অন্তর একবার তাঁকে গড়ে বদলি করা হয়েছে৷ শুধুমাত্র বিজেপি সরকারের আমলেই তিন বার তাঁকে গুরুত্বহীন আর্কাইভ ডিপার্টমেন্টে বদলি করা হয়৷ ২০১৩ সালে কংগ্রেস আমলেও একবার তাঁকে ওই দফতরে বদলি করা হয়েছিল৷