ট্যুইটারে এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট করেছেন হায়দরাবাদের এক নিউরোলজিস্ট। ডা. সুধীর কুমার এমডি ডিএম নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করে জানানো হয়েছে, এক ৫০ বছর বয়সী মহিলা ওই চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। ওই মহিলা জানিয়েছিলেন যে, পার্লারে শ্যাম্পু করার সময় ওই মহিলার মাথা ঘুরছিল। তার সঙ্গে অবসন্ন ভাব এবং গা-বমির মতো উপসর্গও দেখা গিয়েছিল। এই উপসর্গ প্রকাশ্যে আসার পর ওই মহিলাকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্টের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। উপসর্গ অনুযায়ী মহিলার চিকিৎসাও করেন ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ভদ্রমহিলার উপসর্গ তো একটুও প্রশমিত হয়নি, বরং উল্টে পরের দিন সকাল থেকেই হাঁটাচলার সময় বার বার ভারসাম্য হারাচ্ছিলেন তিনি।
advertisement
আরও পড়ুন-আলমারির ভিতরে লুকিয়ে রয়েছে বিড়াল! মাত্র ১৫ সেকেন্ডে খুঁজে বের করাই চ্যালেঞ্জ
নিজের অ্যাকাউন্টের ওই পোস্টে ডা. সুধীর কুমার আরও লিখেছেন, "এই অবস্থায় ওই মহিলা চিকিৎসার জন্য আমার কাছে আসেন। আমি দেখে বুঝতে পারি যে, তাঁর মধ্যে মাইল্ড রাইট সেরিবেলার উপসর্গ রয়েছে। মস্তিষ্কের এমআরআই করে দেখা যায় যে, মস্তিষ্কের ডান সেরিবেলাম এবং ঘাড়ের পিছনে পিআইসিএ নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। বুঝতে বাকি থাকে না যে, বিউটি পার্লার স্ট্রোক সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ওই মহিলা!’’ কিন্তু আচমকা কেন এই বিপত্তি? এর উত্তরও দিয়েছেন ডা. সুধীর কুমার। তাঁর বক্তব্য, চুল ধোওয়ার সময় ওয়াশ বেসিনের দিকে মাথা ঝুঁকিয়ে রাখা এবং হাইপারএক্সটেনশনের কারণেই এটা হয়েছে।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পক্ষে সওয়াল দিলীপ ঘোষের
এখন কেমন আছেন ওই রোগিণী? ডা. সুধীর কুমার জানাচ্ছেন, ভদ্রমহিলা ঘটনার ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যেই ব্লাড থিনারের সাহায্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তবে তাঁকে এটা সারা জীবন চালিয়ে যেতে হবে, যেহেতু তাঁর হাইপারটেনশনের সমস্যা রয়েছে। তবে এই ঘটনা নতুন নয়। এমনটাই জানাচ্ছেন ওই নিউরোলজিস্ট। তিনি জানিয়েছেন, সেই ১৯৯৩ সাল থেকে এমন ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এমনকী এই ধরনের ঘটনা সবথেকে বেশি পুরুষদের সেলুনেই দেখা যায়।
শুধু ডা. কুমারই নন, একই কথা বলছেন আর এক নিউরোলজিস্ট ডা. প্রবীণ কুমার ইয়াদা। তাঁর বক্তব্য, এই ধরনের কেস তিনি বছরের পর বছর ধরে দেখে আসছেন। তাঁর মতে, যখন পার্লার বা সেলুনে মাসাজ করা হয়, তখন ঘাড় ও মাথায় শক্ত হাতে চাপ দেওয়া হয়। এমনকী ঘাড় ঘুরিয়েও অনেক সময় মাসাজ করা হয়। দুই ক্ষেত্রেই রক্ত সরবরাহকারী স্নায়ু প্রভাবিত হয়, যার ফলে স্ট্রোক হয়ে যায়।
তাই এই ধরনের কেসের বিষয়ে সতর্কতা গড়ে তুলতে হবে। কারণ বহু মানুষ পার্লারে গিয়ে শ্যাম্পু অথবা স্পা করেন। আবার পুরুষরা সেলুনে গিয়ে মাথা এবং ঘাড়ের মাসাজও করিয়ে থাকেন। ফলে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে চিকিৎসকদের পরাশর্শ, মিডিয়া অথবা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমজনতার কাছে এই ধরনের কেসের বিষয়ে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।