অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত শিক্ষানুরাগীদের উদ্দেশ্যে সম্বোধন করেন।শিক্ষক দিবসের বিশেষ দিনে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। উদ্বোধকের বক্তব্যে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, শিক্ষক শিক্ষিকাদের গতানুগতিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলিকেও বিদ্যালয়ের পাঠদানে গুরুত্ব দিতে হবে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ চোখের কালো অংশ মণি, সাদা অংশকে কী বলে? ৯৫% মানুষেরই অজানা এই উত্তর, আপনি জানেন?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যকে উল্লেখ করে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাদের কাছে জ্ঞান থাকবে আগামীদিনে পুরো পৃথিবী হাতের মুঠোয় থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রায় ৩৪ বছর পর শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাস্তবের সঙ্গে মিল রেখে দেশে নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু করা হয়েছে। রাজ্যেও এই শিক্ষা নীতি কার্যকর করা হচ্ছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজের দূর্বল ও অনগ্রসর অংশের ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনলাইন ভর্তির প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ছাত্রীদের জন্য ৪৪,৬০০ সাইকেল দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বনগাঁ-দিঘা বন্দে ভারত! কোন রুটে ছুটবে ট্রেন? কোন স্টেশনে স্টপেজের প্রস্তাব? জানুন
এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ বাইসাইকেল দেওয়া হয়েছে। ‘সাইকেল টু গার্লস স্টুডেন্ট’ প্রকল্পটি ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষেও চালু রাখা হবে। এ জন্য বাজেটে প্রায় ৯ কোটি টাকার আর্থিক সংস্থান রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ‘কন্যা আত্মনির্ভর’ যোজনা নামে নতুন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এখন থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় যে ছাত্রীরা ভাল ফলাফল করবে তাদের মধ্যে সেরা ১০০ জনকে স্কুটি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
সরকারি ৪০০ স্কুলকে আধুনিকীকরণের জন্য প্রচুর আর্থিক সংস্থান বাজেটে রাখা হয়েছে। যুব সম্প্রদায়কে দেশ সেবার প্রতি উৎসাহিত করতে ত্রিপুরা অগ্নিবীর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেনারেল স্কুল কলেজে ছাত্রীদের জন্য সকল ধরণের ফি মুকুব করা হয়েছে। দিব্যাঙ্গ পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার প্রতি উৎসাহিত করতে চিফ মিনিস্টার স্পেশ্যাল স্কলারশিপ চালু করা হয়েছে। এতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে ৫০০০ টাকা এবং ডিপ্লোমা স্তরে ৪০০০টাকা বৃত্তি প্রদান করা হবে। ১১ সাধারণ ডিগ্রি কলেজে ন্যাশনাল স্কিম ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল সহায়তা বৃত্তিমূলক পাঠ্যক্রম চালু করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা আরও জানান, ২০২৩ অর্থবর্ষে পিপিপি মডেলে রাজ্যে আরও দুটি নতুন কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্যের সমস্ত ডিগ্রি কলেজ ও পলিটেকনিক কলেজে ফ্রি ওয়াইফাই চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর্থিক ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ত্রিপুরায় বর্তমানে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মানিক সাহা বলেন, রাজ্য সরকার চাইছে ত্রিপুরায় শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন ঘটাতে। এই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে সরকার। ত্রিপুরার ছেলেমেয়েদের মেধার কোনও অভাব নেই। এই অনুষ্ঠানে পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিশেষ অবদানের জন্য শিক্ষক দিবসে রাজ্যের চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ কনক নারায়ণ ভট্টাচার্য ও তাঁর টিমকে “পন্ডিত ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্মান ২০২৩” প্রদান করা হয়। সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য প্রয়াত নগেন্দ্র জমাতিয়াকে “মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য সম্মান ২০২৩” (মরণোত্তর) সম্মানে সম্মানিত করা হয়। প্রয়াতের হয়ে তাঁর ছেলে ডা: কাহমনুক জমাতিয়ার হাতে এই সম্মান তুলে দেওয়া হয়। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সহিষ্ণু জমাতিয়াকে “মহারানি তুলসীবাতি সম্মান- ২০২৩” সম্মান দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রখ্যাত সমাজকর্মী ভীষ্ম গুপ্তকে “ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি সম্মান- ২০২৩” সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে।
ABIR GHOSHAL