দু'রাজ্যের বিশেষজ্ঞ ও মিষ্টি প্রেমিকরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিলেন ময়দানে। তথ্যপ্রমাণ যোগাড়ে ভরসা যোগায় ইতিহাস। প্রাচীন পুঁথি থেকে পান্ডুলিপি ঘেঁটে তাঁরা দাবি করেন, রসগোল্লায় তাঁদেরই অধিকার। তবে দু'বছরের আইনি লড়াইয়ের পর জিওগ্র্যাফিক্যাল ইন্ডিকেশন জানিয়েছে ওড়িশা নয়, রসগোল্লা বাংলার সম্পদ। নামে মিল থাকলেও দু'রাজ্যের রসগোল্লার আকৃতি ও চরিত্রে কিছু অমিলও আছে।
advertisement
প্রাচীন পুঁথি ও ইতিহাসের তথ্য দিয়ে ওড়িশাকে মাত করল বাংলা। ২০১৫ সালে রসগোল্লার জন্য ভৌগলিক সূচকের দাবি করে ওড়িশা। যা পেটেন্টের সমতুল্য। ওড়িশার যুক্তি ছিল, একশো বছর ধরে জগন্নাথ মন্দিরে রসগোল্লা ভোগের রীতি আছে। দুধ কেটে যে ছানা তৈরি হয় তা অন্য হিন্দু মন্দিরে ব্রাত্য হলেও জগন্নাথ মন্দিরে দীর্ঘদিনের পরম্পরা। অন্যদিকে বাংলার দাবি ছিল, ১৮৬৮ সালে নবীন চন্দ্র দাস প্রথম রসগোল্লা তৈরি করেন। এর স্বীকৃতি দিয়েছেন ইতিহাসবিদরাও। রসগোল্লার ছানা সম্বন্ধে কিছুই জানে না ওড়িশা। এই ছানা নবীন দাসের দীর্ঘদিনের গবেষণার ফল। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ দেখতে আসতেন তাঁরা ছানায় কি মেশাচ্ছেন যাতে রসগোল্লা ভেঙে না যায়। তাঁদের রসগোল্লায় সুজি বা ময়দার ভেজাল নেই।
স্বাদ,রঙ,আকার,মিষ্টতা এমনকি আচরণেও নাকি আলাদা বাংলা আর ওড়িশার রসগোল্লা। এমনটাই জানাচ্ছেন রসগোল্লা তথা মিষ্টি প্রেমিকরা। কিন্তু আম বাঙালির কাছে অতি পরিচিত রসগোল্লার সঙ্গে ওড়িশার রসগোল্লার কি পার্থক্য? জেনে নিন। নামে মিল থাকলেও দুই রাজ্যের রসগোল্লার আকৃতি ও চরিত্রে কিছু অমিলও আছে।
বাংলার রসগোল্লা
-পুরোপুরি ছানা থেকে হয়
-রং হয় সাদা
- সাধারণত রস হয় পাতলা
-মিষ্টি স্বাদ আনতে চিনির ব্যবহার
ওড়িশার রসগোল্লা
- ক্ষীর ও সুজি থেকে হয়
-রং হয় লাল
-রস হয় মোটা
-মিষ্টি স্বাদ আনতে গুড়ের ব্যবহার
এই বাংলায় ১৮৬৪ সালে নবীনচন্দ্র দাস প্রথম রসগোল্লা তৈরি করতে শুরু করেন। ১৮৬৮ সালে বর্তমান রসগোল্লায় আত্মপ্রকাশ। আর ওড়িশায় রসগোল্লার জন্মের দাবি অপেক্ষাকৃত নতুন। তাই ওড়িশার দাবি ধোপে টেকে না। জানিয়েছেন রসগোল্লা বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও তাঁদের বক্তব্য, অবিভক্ত বাংলা-বিহার-ওড়িশায় রসগোল্লার প্রমাণ পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে আলাদা করে রসগোল্লা নিয়ে ওড়িশার দাবি কখনই বাস্তবসম্মত নয়। কেউ কেউ তো দাবি করেছেন, রসগোল্লা নাকি প্রথম তৈরি হয়েছিল এই বাংলারই নদিয়ায়।
রসযুদ্ধে দাবি, পাল্টা দাবির লড়াইয়ে শেষহাসি হাসল বাংলাই। বাঙালির পাতে স্বমহিমায় রসগোল্লাকে পেয়ে মিষ্টিমুখ রাজ্যবাসীর। বাংলা ঐতিহ্য ধরে রাখতে পেরে খুশি মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরাও।
.quote-box { font-size: 18px; line-height: 28px; color: #767676; padding: 15px 0 0 90px; width:70%; margin:auto; position: relative; font-style: italic; font-weight: bold; }
.quote-box img { position: absolute; top: 0; left: 30px; width: 50px; }
.special-text { font-size: 18px; line-height: 28px; color: #505050; margin: 20px 40px 0px 100px; border-left: 8px solid #ee1b24; padding: 10px 10px 10px 30px; font-style: italic; font-weight: bold; }
.quote-box .quote-nam{font-size:16px; color:#5f5f5f; padding-top:30px; text-align:right; font-weight:normal}
.quote-box .quote-nam span{font-weight:bold; color:#ee1b24}
@media only screen and (max-width:740px) {
.quote-box {font-size: 16px; line-height: 24px; color: #505050; margin-top: 30px; padding: 0px 20px 0px 45px; position: relative; font-style: italic; font-weight: bold; }
.special-text{font-size:18px; line-height:28px; color:#505050; margin:20px 40px 0px 20px; border-left:8px solid #ee1b24; padding:10px 10px 10px 15px; font-style:italic; font-weight:bold}
.quote-box img{width:30px; left:6px}
.quote-box .quote-nam{font-size:16px; color:#5f5f5f; padding-top:30px; text-align:right; font-weight:normal}
.quote-box .quote-nam span{font-weight:bold; color:#ee1b24}
}