সম্প্রতি CNN-News18-এর একটি ভিডিওতে দেখানো দৃশ্যাবলী পাক সরকারের এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ৷ CNN-News18-এর ভিডিও-টিতে দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলবার সকালেও লাহোরের মডেল টাউনে অবস্থিত লস্কর-ই-তৈবার অফিসে রমরমিয়ে চলছে কাজ ৷ একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে লস্কর-ই-তৈবার হেড কোয়ার্টার লাহোরের মুর্দিকে ৷ উল্লেখ্য, এই দুটি অফিস থেকেই মূলত এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী নতুন জঙ্গিদের নিয়োগ করে এবং প্রশিক্ষণ দেয় ৷
advertisement
পাক সংবাদ মাধ্যম জানায়, ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রী ও জামাত-উদ-দাওয়ার (লস্করের একটি শাখা) প্রধান হাফিজ সইদকে সোমবার মধ্যরাত থেকে লাহোরে তাঁর বাড়িতে বন্দি করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক সরকার ৷
জেইউডি-র মুখপাত্র দাবি করেছে, পাক পঞ্জাব পুলিশ লাহোরে তাদের গোষ্ঠীর হেডকোয়ার্টারে এসে হাফিজকে গৃহবন্দি করার কথা জানায়। পঞ্জাব সরকার হাফিজকে গৃহবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ সোমবার রাত থেকেই জামাত-উদ-দাওয়ার দফতর ঘিরে রেখেছে পুলিশ ৷ একইসঙ্গে আরও চার জঙ্গি নেতাকেও গৃহবন্দি করার খবর দেয় পাক সংবাদ মাধ্যম ৷ তারা হলেন আবদুল্লা ইবাইদ, জাফর ইকবাল, আব্দুর রহমান ও কাজি কাসিফ ৷ চারজনই জামাত-উদ-দাওয়ার সদস্য বলে জানা গিয়েছে ৷
এরপরই গৃহবন্দি দশায় হাফিজ সইদ সোজাসাপটা জানান, ‘মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধুত্বের জন্যই তিনি আজ গৃহবন্দি ৷’
পাক সংবাদ মাধ্যমের তরফে জানানো হয়, খুব শীঘ্রই পাকিস্তানে নিষিদ্ধ হতে চলেছে জামাত-উদ-দাওয়া ৷ এরপর খবর আসে, পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষিত সন্ত্রাসবাদী হাফিজ সইদের পাকিস্তানের বাইরে সফরে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ৷ অর্থাৎ পাকিস্তানের অন্দরেই বন্দি থাকবেন লস্কর প্রধান ৷ একইসঙ্গে পাক সরকার ব্যাঙ্কগুলির কাছে জামাত-উদ-দাওয়া-এর সমস্ত অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ৷
মনে করা হচ্ছে নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপে পড়েই এই কড়া পদক্ষেপ নিল ইসলামাবাদ ৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে সমস্ত তদন্তকারী সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়ে হাফিজের দেশের বাইরে বেরনোর নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানানো হয়েছে ৷ বলা হয়েছে, সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় তাঁকে গৃহবন্দি করা হয়েছে ৷ সমস্ত অভিযোগের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশ ছাড়তে পারবেন না সইদ হাফিজ ৷ অদূর ভবিষ্যতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী খুররম দস্তগির। এছাড়াও জামাত-উদ-দাওয়া এবং ফালাহ-ই-ইনসানিয়ত-এর আরও কয়েকজন মাথাকেও গ্রেফতার করা হতে পারে ৷ লস্কর প্রধান হাফিজ ছাড়াও ইসলামাবাদের এক্সিজ কন্ট্রোল তালিকায় আর ৩৮ জনের নাম রয়েছে ৷
ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বের সাতটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশের শরণার্থীদের মার্কিন মুলুকে প্রবেশ নিষিদ্ধ বলে জানিয়ে দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ হোয়াইট হাউসের অন্দরের খবর, খুব তাড়াতাড়িই অভিবাসন নিষিদ্ধকরণ তালিকায় অষ্টম দেশ হিসেবে ঢুকতে চলেছে পাকিস্তানের নাম ৷ এরপরই তড়িঘড়ি এমন সিদ্ধান্ত শরিফ সরকারের ৷ কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এই ভিডিও ৷
উল্লেখ্য, ২০০৮ সলে ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে হাফিজকে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক জঙ্গি আখ্যা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। হাফিজ ছাড়া রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ওয়াচ লিস্টে নাম রয়েছে বাকি চার সদস্যের ৷ US সরকার হাফিজ সইদকে ধরার জন্য ১০ মিলিয়ন US ডলারের পুরস্কারমূল্য নির্ধারণ করে ৷