জটিল এই স্নায়ুরোগের নাম সিন্ড্রোম বা জিবিএস৷ বিরল এই রোগে আক্রান্ত হলে হাঁটাচলা তো বটেই, এমন কি খাওয়া দাওয়ার ক্ষমতা হারাতে পারেন মানুষ৷ ইন্ডিয়া টুডেতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, আচমকা পুণের এতজন বাসিন্দা কেন পর পর এই বিরল এবং জটিল স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য দফতর৷
advertisement
আরও পড়ুন: শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক! তড়িঘড়ি কার্ডিওলজি ICCU-এ স্থানান্তর, হৃদযন্ত্রে সমস্যা পার্থর
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘বুধবার জিবিএস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৯৷ আক্রান্তদের মধ্যে ৩৮ জন পুরুষ এবং ২১ জন মহিলা৷ তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দিতে হয়েছে৷’
ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, মূলত শিশু এবং কম বয়সিরাই এই রোগে আক্রান্ত হন৷ তবে এই রোগ মহামারি বা অতিমারিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা নেই৷ যথাযথ চিকিৎসায় জিবিএস-এ আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাধারণত ব্যাক্টেরিয়া অথবা ভাইরাল ইনফেকশন থেকেই জিবিএস-এ আক্রান্ত হন মানুষ৷ এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে৷
জিবিএস এমন একটি বিরল স্নায়ু রোগ, যাতে আক্রান্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্নায়ুগুলিকে আক্রমণ করে৷ যার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, অবশ হতে শুরু করে হাত-পা, যা শেষ পর্যন্ত মানুষকে পঙ্গুত্বের দিকেই ঠেলে দেয়৷ জিবিএস শুধু একটি বিরল রোগ নয়, এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রকৃত কারণও এখনও অজানা৷ এই রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত মানুষের পায়ের পাতা থেকে সমস্যা শুরু হয়৷ ধীরে ধীরে যা শরীরের উপর দিকে উঠে পা, হাত, মুখ এবং নিশ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার সহায়ক মাংসপেশীগুলিকে অকেজো করতে শুরু করে৷ যার ফলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা তো বটেই, এমন কি হাঁটাচলা করতে গিয়েও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়৷
এই সমস্যাগুলির পাশাপাশি এই রোগে আক্রান্ত হলে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়া, খাবার গিলতে সমস্যা, কথা বলা, খাবার চিবনোয় সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ রাতের দিকে হাতে, পায়ে কাঁটায় বিদ্ধ হওয়ার মতো তীব্র যন্ত্রণাও অনুভূত হয়৷ অস্বাভাবিক হ্রদস্পন্দন অথবা রক্তচাপ, হজমে সমস্যাও দেখা দেয়৷ এই রোগের এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই৷ নার্ভ কন্ডাকশন ভেলোসিটি টেস্ট-এর ফল দেখে চিকিৎসক নির্ণয় করেন কেউ জিবিএস-এ আক্রান্ত কি না৷ এই রোগের চিকিৎসাও মূলত থেরাপি নির্ভর৷