রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস অবশ্য এমনটা ভাবেন না। তিনি সুদের হার কমানোর আগে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার পক্ষপাতী। অক্টোবরে কনজিউজার প্রাইস ইনডেক্স বা সিপিআই ১৪ মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর পিছনে রয়েছে খাদ্য এবং সবজির মূল্যবৃদ্ধি। ফলে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই বললেই চলে।
প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরনের মতোই পীযূষ গোয়েলও মনে করেন সুদের হার বেশি হলেই খাবারদাবারের দাম কমবে না। মুম্বইয়ে CNBC-TV18-এর গ্লোবাল লিডারশিপ সামিটে তিনি বলেন, “খাদ্য মূল্যস্ফীতির সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি ব্যবস্থাপনার কোনও সম্পর্ক নেই। এটাই সময়, নীতিনির্ধারক এবং আর্থিক নীতি কর্তৃপক্ষে একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিক, খাদ্য মূল্যস্ফীতিকে মূল মুদ্রাস্ফীতির অংশ হিসাবে ধরা উচিত কি না। এই বিষয়টা গুরুত্বসহকারে ভাবা উচিত।”
advertisement
তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বরাবর এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এসেছেন। তাঁর মতে, সাধারণ মানুষ মূল্যস্ফীতিকে খাবারের দামের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে, যা তাঁদের বাজেটে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে।
তাত্ত্বিক দিক থেকে দেখলে, সুদের হার কমালে সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। গোয়েলের মন্তব্যের কিছুক্ষণ পরেই CNBC-TV18 আয়োজিত গ্লোবাল লিডারশিপ সামিটে উপস্থিত হন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। তিনি তাঁর আগের একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “আর্থিক স্থিতিশীলতা জনস্বার্থমূলক বিষয়। বাড়িতে কবে আগুন লাগবে আমরা তার জন্য অপেক্ষা করি না। আগেভাগে ব্যবস্থা নিয়ে রাখি। এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থাই আমাদের পরিচালনার নীতি।”
এদিন শক্তিকান্ত দাস বলেন, “মহামারীর সময় আমরা প্রবৃদ্ধিকেই অগ্রাধিকার দিয়েছিলাম, প্রচুর লিকুইডিটি ঢোকানো হয়েছিল…পরে আমরা মুদ্রাস্ফীতিতে ফোকাস করি।” সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই সব পদক্ষেপের ফলে প্রবৃদ্ধি বা আর্থিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয়নি। এ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়, মহামারী এবং তারপরে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির মোকাবিলায় আমরা যে পলিসি নিয়েছিলাম তা যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে।”
জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। কিন্তু আয় থেকে যাচ্ছে একই জায়গায়। ফলে চাহিদায় লাগাম পরাচ্ছে আমজনতা। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এই বিতর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলির জন্য। তবে এই বিতর্ক নতুন নয়। এদিন সেটাকেই আবার উস্কে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর।