প্রশ্নটার উত্তর কিন্তু খুব সহজ- প্রতি শিশুর যথাযথ লালন-পালনের মাধ্যমে। যদি তারা উপযুক্ত শিক্ষা, উপযুক্ত মূল্যবোধ লাভ করতে পারে, তাহলে সমাজে তারাই আলো এনে দেবে। কিন্তু বাস্তব বড় কঠোর, সব শিশু সেই সুযোগ পায় না।
এবার যদিও উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে একটি দৃষ্টান্তমূলক গল্প সামনে এসেছে। আমরা প্রায়শই আমাদের চারপাশে অভাবী শিশুদের আবর্জনা তুলতে বা বর্জ্য সংগ্রহ করতে দেখি। তবে, আমরা প্রায়শই এই শিশুদের সংগ্রামের কারণগুলিকে উপেক্ষা করি, তারা কেন স্কুলে যাচ্ছে না এই নিয়ে বিশেষ ভাবি না। তবে যখন একজন ব্যক্তি জানতে পারলেন যে শিশুরা স্কুলে না গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহের কাজ করছে, তিনি একটি সচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু করেছিলেন। যার ফলে এখন কিছু শিশু স্কুলে যাচ্ছে।
advertisement
আমরা পাহাড়পুর গ্রামের শিশুদের কথা বলছি, যারা দেবকালী ব্লকের মাউপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। অনেক শিশু স্কুলে যেত না। গ্রামের অবস্থা এমন ছিল যে, এই শিশুরা প্রতিদিন আবর্জনা তুলত এবং তাদের উপার্জিত আয়ে তাদের পরিবারের ভরণপোষণ করত। জেলে কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল অনিল কুমার যখন অধ্যক্ষের কাছ থেকে এই বিষয়ে জানতে পারেন, তখন তিনি হতবাক হয়ে যান। তিনি ব্যক্তিগতভাবে গ্রামে গিয়ে শিশুদের এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন।
এতে জানা গিয়েছে যে, অনেক পরিবার সংগ্রাম করছে এবং অনেকেই মাদকাসক্তির কারণে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারছে না। শিক্ষকরা এই শিশুদের স্কুলে ভর্তি করেছিলেন, কিন্তু কখনও তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেননি। কনস্টেবল অনিল নিজের সংগ্রামের কথা শিশুদের বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাগ করে নেন। দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে কীভাবে তিনি এই পদে পৌঁছেছেন তা ব্যাখ্যা করেন। তাঁর কথা পরিবারের উপর প্রভাব ফেলে এবং তারা শিশুদের স্কুলে পাঠাতে রাজি হয়।
অনিল ১২ জন শিশুকে নোটবুক, পেন্সিল এবং চকোলেট প্রদান করেন। তিনি তাদের স্কুলে নিয়ে যান, শ্রেণীকক্ষে থিতু হতে সাহায্য করেন এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেন। ফলস্বরূপ, প্রায় এক ডজন শিশু আবর্জনা তোলার পরিবর্তে এক সপ্তাহ ধরে ব্যাগ নিয়ে এখন স্কুলে যাচ্ছে। অনিল বলেন, যদি একটি ছোট প্রচেষ্টাও একটি শিশুর জীবন পরিবর্তন করতে পারে, তবে এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কিছু হতে পারে না।
