সম্প্রতি গঙ্গাধর গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের (Golden Book of World Records) পাতায় নিজের নাম খোদায় করে নিয়েছেন। গত ২৪ জানুয়ারি তিনি উদুপির সমুদ্র সৈকতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ডলফিনের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েন। তার পর গভীর সমুদ্রে ৩.৫ কিলোমিটার সাঁতার কাটেন। এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে তিনি সময় নেন প্রায় ছয় ঘণ্টা। জানা গিয়েছে, সকাল ৭.৫০ মিনিটে তিনি তাঁর যাত্রা শুরু করেন। দুপুর ১.২৫ মিনিটে তিনি তাঁর গন্তব্যে পৌঁছে যান। সঙ্গে সঙ্গে নতুন রেকর্ড গড়ে নিজের নাম খোদায় করে নেন বিশ্ব ইতিহাসের পাতায়।
advertisement
তবে এই প্রথমবার নয়, ঠিক এক বছর আগেও তিনি সাঁতারের ইতিহাসে রেকর্ড করেন। গত ২৪ জানুয়ারি ২০২১ সালে কর্নাটকের পাদুকেরে সমুদ্র সৈকতে 'পদ্মাসন' ভঙ্গিতে পা বাঁধা অবস্থায় ৭৩.৭ মিনিটে ১.৪ কিমি সাঁতার কেটে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছিলেন। এমনকী বাতাসের প্রতিকূলে সাঁতার কাঁটার রেকর্ডও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
জানা গিয়েছে, বাতাসের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র বুকে ভর দিয়ে সাঁতরে বেশ কিছুটা পথ পাড়ি দিয়ে নিজের গন্তব্যে পৌঁছে যান কাদেকর। পাশাপাশি ওই সালেই ১৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সেন্ট মেরিস দ্বীপে ৪১ জন ছাত্রের সঙ্গে সাঁতারে পাল্লা দেন গঙ্গাধর।
শুধু কী তাই, এছাড়াও রাজ্য ও জাতীয় স্তরের সাঁতার প্রতিযোগিতায় বহু বার অংশ নিয়েছেন তিনি। পুরস্কারের ঝুলিতে পুরে নিয়েছেন ৩১টি সোনা, ১৬টি রুপো ও ৯টি ব্রোঞ্জ পদক। এছাড়াও ২০২১ সালে জেলা স্তরের কর্নাটক রাজ্যোৎসব পুরস্কারের তালিকায়ও জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম।
আরও পড়ুন: যারা টিকা নেয়নি, তাদের জন্য বিপদ নিয়ে আসছে করোনাভাইরাস!
তবে এ নিয়ে তাঁর কোনও বাড়তি উদ্দীপনা নেই। তাঁর সাফ কথা, "সাফল্যের কোনও বয়সসীমা থাকে না"। ইচ্ছা থাকলে যে কোনও বয়সেই তা অর্জন করা সম্ভব। পাশাপাশি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কাদেকর বলেন, উদুপিতে তিনি জয় দুর্গা সুইমিং ক্লাব নামে একটি সাঁতারের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছেন। যেখানে কয়েক হাজার যুবক-যুবতী সাঁতারের প্রশিক্ষণ নেন নিয়মিত। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের অনুপ্রেরণা দিতে তিনি এই নজির সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন, সমুদ্র বলে কথা, তা অনেক গভীর ও রুক্ষ। কিন্তু তিনি তাঁর আত্মবিশ্বাস হারাননি। তিনি আরও বলেন, "আমি অনেক যুবক- যুবতী এবং বাচ্চাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাদের উৎসাহ দেওয়া ও নিজেকে প্রমাণ করার জন্যই আমি এই রেকর্ড গড়েছি"।
কাদেকরের এই রেকর্ডের পর গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তরফ থেকে তাঁকে একটি অস্থায়ী শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের প্রতিনিধি মণীশ বিশনোই বলেন, "যে বয়সে মানুষ অবসর নেয় এবং বাড়িতে থাকে, সেই বয়সে কাদেকরের এই সাফল্য সত্যিই অভাবনীয়।"