খুন হওয়া মনোজের কল ডিটেলে পুলিশ একটি সন্দেহজনক নম্বর খুঁজে পায়। দুই মাস আগে পর্যন্ত এই নম্বর থেকে মনোজের সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো, তবে সাম্প্রতিক সময়ে মাত্র ৩-৪ বার কথা হয়েছে। অন্যদিকে, একটি নতুন নম্বর থেকে প্রতিদিন মনোজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছিল। তদন্তে দেখা যায়, দুই নম্বরের অবস্থান একই জায়গায় ছিল। পুরনো নম্বরটি ছিল অঙ্কিতা ওরফে দীপিকার, যিনি লখনউয়ের কাকোরির বাসিন্দা।
advertisement
পুলিশ যখন অঙ্কিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করল, তখনই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হল। জানা গেল, অঙ্কিতার স্বামী মহেন্দ্র উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কনস্টেবল এবং বর্তমানে লখিমপুর খিরিতে কর্মরত। স্বামীকে সঙ্গ দিতে অঙ্কিতা প্রেমিক মনোজকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, কিন্তু মহেন্দ্র এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি।
ডিসিপি বিশ্বজিৎ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, মনোজ ও অঙ্কিতার সম্পর্ক স্কুলজীবন থেকেই ছিল। ২০২১ সালে অঙ্কিতার বিয়ে হয় মহেন্দ্রের সঙ্গে, কিন্তু বিয়ের পরও তার সঙ্গে মনোজের সম্পর্ক চলতে থাকে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে মহেন্দ্র এ সম্পর্কে জানতে পারেন এবং অঙ্কিতাকে আল্টিমেটাম দেন— হয় মনোজকে ছাড়তে হবে, নয়তো বিবাহবিচ্ছেদ নিতে হবে।
আরও পড়ুন: জামাইবাবুকে গভীর রাতে বোরখা পরে আসতে বলল শালী! তারপর যা হল তাতেই উড়ে গেল দিদির ঘুম…
অঙ্কিতা স্বামীর সঙ্গেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন, কিন্তু মনোজকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এরপর মহেন্দ্র ভুয়া আইডি দিয়ে দুটি নতুন সিমকার্ড কিনে নেয়। একটি অঙ্কিতার কাছে ছিল, অপরটি মহেন্দ্রের কাছে। অঙ্কিতা নতুন সিম দিয়ে মনোজের সঙ্গে কথা বলতেন এবং একই সিম থেকে স্বামীর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন। তবে দুই মাস আগে অসাবধানতার কারণে পুরনো নম্বর থেকেও দু-একবার মনোজকে ফোন করেন। এটাই পুলিশের কাছে বড় সূত্র হয়ে দাঁড়ায়।
হত্যার দিন অঙ্কিতা ফোন করে মনোজকে দেখা করতে ডাকেন। অন্যদিকে, মহেন্দ্র তার এক ভাগ্নে ও দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তার পাশে ওঁৎ পেতে বসে থাকেন। যখন মনোজ আসে, তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, মনোজের সঙ্গে তার বন্ধু রোহিতও ছিল। মহেন্দ্র জানতেন, রোহিত তাকে চেনে, তাই সাক্ষী রাখার ঝুঁকি নিতে চাননি। ফলে রোহিতকেও একইভাবে হত্যা করা হয়।
খুনের পর মহেন্দ্র লখিমপুরে পালিয়ে যান। কিন্তু অঙ্কিতার ফোন ট্র্যাক করতেই রহস্যের জট খুলে যায়। মনোজের সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরে অঙ্কিতা ও মহেন্দ্রকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
তদন্তে দম্পতি হত্যার কথা স্বীকার করে। পুলিশ মহেন্দ্র ও অঙ্কিতাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে, এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর তিন অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।