জাতীয় সড়ক (National Highway)সংক্রান্ত ওই জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ চার লেনের সড়কের জমি পেতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে সবরকম সাহায্য করতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনগুলিকে। যদিও জমির অভাবে একসময় রাজ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল ইস্ট-ওয়েস্ট হাইওয়ে করিডরের কাজ। জমির অভাবে কাজ আটকে যায় রাজ্যে। শিলচর থেকে পোরবন্দর অবধি ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর বানানো হচ্ছে।
advertisement
রাজ্যে এই প্রকল্পের বাজেট ১৮০০ কোটি টাকা।কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় জমির অভাবে আটকে কাজ। এই প্রকল্প দুটি ভাগে বিভক্ত।প্রথম অংশ ধূপগুড়ি থেকে সালসাবাড়ি। এই অংশের মোট দুরত্ব ৭২ কিমি।তার মধ্যে ধূপগুড়ি থেকে ফালাকাটার দুরত্ব ২৯ কিমি।এই অংশে চলছে একদিকে জমি অধিগ্রহণ ও DPR বানানোর কাজ।অপর অংশ হল ধূপগুড়ি বাইপাস তৈরি।এখানে সাধারণ মানুষ সমীক্ষার কাজটাও করতে দিচ্ছে না। প্রকল্পের দ্বিতীয় অংশ ফালাকাটা থেকে সালসাবাড়ি।এই অংশের দুরত্ব হচ্ছে ৪৩ কিলোমিটার। এখানে মাত্র ১৭ কিলোমিটার অংশে জমি মিলেছে।জানুয়ারি ২০১৯ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।জমির অভাবে কাজ না এগোনোয় ঠিকাদার সংস্থা কাজ বন্ধ করতে চাইছে।জেলাশাসকদের একাধিক বার জমির বিষয়ে বলা হয়েছিল।সমস্যা না মেটায় কাজ বন্ধ হবার সম্মুখীন হয়েছিল এই প্রকল্পের। চার লেনের পূর্ব–পশ্চিম সড়ক তৈরিতে জমি জট কাটিয়ে সুষ্ঠুভাবে সড়ক তৈরিতে নজরদারির জন্য হাইকোর্ট একজন স্পেশ্যাল অফিসারও নিয়োগ করেছিল। হাইকোর্টের নজরদারিতে জলপাইগুড়ি জেলায় জমি জট তুলনামূলক কাটলেও উত্তর দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলায় জটের কারণে সড়কের কাজ শুরুই করা যায়নি বলে অভিযোগ।
আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলা মিলিয়ে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক তৈরি হবে।যে অংশের জমি মেলেনি, সেখানকার জমিদাতাদের একাংশ ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন। কিন্তু অন্য অংশ ক্ষতিপূরণের হার বৃদ্ধির দাবি তুলে মামলা করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণের হার নিয়ে বিবাদ চলতে থাকলেও জমি পেতে আইনত বাধা আসা উচিত নয় বলে নবান্নে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছিল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।ঘোষপুকুর থেকে ধূপগুড়ি এবং ফালাটাকা থেকে সলসলাবাড়ি—এই দুই ভাগে কাজ শুরু করেছিল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তার পরে প্রায় আট বছর কেটে গেলেও কোনও অংশের কাজই শেষ হয়নি। জমি জটে তা থমকে গিয়েছে।বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পরে উত্তরবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ এগোবে বলেই মনে করছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের জেনারেল ম্যানেজার আর পি সিং জানিয়েছেন, "এই প্রকল্পে একাধিক জায়গায় হাই টেনশন লাইন রয়েছে। সেখানে জমি নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসককে বলা হয়েছে হাই টেনশন টাওয়ার সরানোর জন্যে। ধূপগুড়ি থেকে ফালাকাটার মধ্যে যে DPR করার কাজ আটকে ছিল। সেটা সম্পূর্ণ করার জন্যে জলপাইগুড়ির জেলাশাসককে দেখতে বলা হয়েছে।" সব মিলিয়ে রাজ্যের উদ্যোগে এগোচ্ছে উত্তরের রাস্তা।