প্রথম দফায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্য আমদানির উপরে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলেন৷ তার পরেও ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ না করায় ভারতীয় পণ্যের উপরে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারত থেকে আমেরিকায় যে পরিমাণ রফতানি হয়, তার দুই তৃতীয়াংশই নতুন এই শুল্ক হারের কোপে পড়কে চলেছে৷ টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি৷ ফলে একদিকে যেমন মার্কিন বাজারে এই পণ্যগুলির দাম একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যাবে, সেরকমই অন্যান্য দেশের সঙ্গে দামের প্রতিযোগিতাতেও পিছিয়ে পড়বে ভারতীয় পণ্যগুলি৷
advertisement
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার এই শুল্ক বৃদ্ধির জেরে ভারতে বস্ত্র, রত্ন, অলঙ্কার, কার্পেট, আসবাব, সামুদ্রিক খাদ্য পণ্যের মতো ক্ষেত্রগুলির উপরে সবথেকে বেশি প্রভাব পড়বে৷ ভারতের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের একাংশের উপরেও বিরাট প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রে প্রভাব পড়লে মানুষের কাজ হারানোর আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷
তবে বিশেষজ্ঞরা একই সঙ্গে দাবি করছেন, ভারতীয় পণ্যের উপরে এই অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর খেসারত দিতে হবে আমেরিকাকেও৷ ভারতীয় পণ্যের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির জেরে আমেরিকার অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের৷ পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়বে মুদ্রাস্ফীতিও৷ যা এমনিতেই আমেরিকায় এখন যথেষ্ট বেশি৷ ফলে অদূর ভবিষ্যতে মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য আমেরিকাকে পদক্ষেপ করতেই হবে৷
বর্তমানে আমেরিকায় প্রায় ৮৬.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করে ভারত৷ ট্রাম্পের শুল্কবৃদ্ধির জেরে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে তা কমে ৪৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে৷
ভারত থেকে যে পণ্য আমেরিকায় রফতানি করা হয়, তার মধ্যে ৩০ শতাংশ নতুন শুল্ক হারের আওতার বাইরে থাকবে৷ বাকি ৪ শতাংশের উপরে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসবে৷ কিন্তু বাকি প্রায় ৬৬ শতাংশ পণ্যের উপরেই ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপতে চলেছে৷
ভারতীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে অন্যান্য দেশের তুলনামূলক সস্তা পণ্যের দিকে ঝুঁকবেন মার্কিন ক্রেতারা৷ সেক্ষেত্রে সুবিধা পেতে পারে চিন, মেক্সিকো, তুরস্ক, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলি৷