দেশের অন্যত্রের মতো রাজস্থানেও নানা লৌকিক দেব-দেবীর দর্শন মেলে আমাদের। নাগৌরের কুমহার বা প্রজাপত গোষ্ঠীর আরাধ্যা দেবী এই ইয়াদিন মাতা। বলা হয়, শারীরিক থেকে মানসিক, কষ্ট যে রকমই হোক না কেন, তা তাঁর বরাভয়ে দূর হয়। বিশেষ করে আরোগ্য মেলে জটিল মাথাব্যথা বা গা-হাত-পায়ের ব্যথা থেকে।
ইয়াদিন মাতার কাহিনী নিউজ১৮-কে জানিয়েছেন মন্দিরের পুরোহিত সীতারাম। সত্যযুগে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ইন্দাব্রতে জলন্ধরজির গৃহে। জলন্ধর তাঁর এই সুকন্যাকে সমর্পণ করেন গড় মুলতানের সাওয়ান্তের হাতে। এই গড় মুলতান ছিল হিরণ্যকশিপুর রাজধানী, সেখানে দেবতার আরাধনা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ইয়াদিন মাতা এবং সাওয়ান্তজি গোপনে মাটির মূর্তি গড়ে প্রভু বিষ্ণুর আরাধনা করতেন।
advertisement
বলা হয় যে, জন্মের পর মাতৃদুগ্ধ থেকে বঞ্চিত ছিল ভক্ত প্রহ্লাদ। টানা ৭ দিনেও যখন সে মাতৃস্তন্য পান করল না, তখন হিরণ্যকশিপু পুত্রের জন্য ধাত্রী নিয়োগের আদেশ দিলেন। সেই সময়ে এগিয়ে আসেন পুণ্যবতী মাতা ইয়াদিন, তাঁর স্তন্যদুগ্ধে জীবন পায় প্রহ্লাদ। বলা হয়, এভাবেই প্রথম পর্বে ইয়াদিন মাতার বিষ্ণুভক্তি সঞ্চারিত হয়েছিল প্রহ্লাদের মধ্যে।
এর পর একদিন প্রহ্লাদ এক অবিশ্বাস্য ঘটনা দেখে। দাসীর অন্যমনস্কতায় এক বিড়াল দুধের পাত্রে পড়ে গিয়ে মারা যায়, ইয়াদিন মাতা হরি নাম উচ্চারণ করে তাকে জীবন ফিরিয়ে দেন। বিড়াল যেমন প্রাণ পায়, তেমনই প্রভুর নামের মাহাত্ম্যে দুধেরও স্বাদ যায় বেড়ে। এর পরেই সরাসরি বিষ্ণুভক্ত হয়ে পড়ে প্রহ্লাদ, হরি নাম তার মুখে লেগে থাকে।
পুরোহিত জানিয়েছেন যে ইতিপূর্বে কেবল এই পুণ্যস্থলে এসে দেবীর বিগ্রহের আরাধনা করে যেতেন ভক্তেরা। ২০১১ সালে স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবীর মন্দির নির্মাণ করে দেন মাঙ্গারাম প্রজাপত।