আজকের দিনে এক দলিত মেয়ে তাঁর ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা সকলের সামনে তুলে ধরলেন। উত্তরপ্রদেশেই থাকেন তিনি। এখন আইন নিয়ে পড়াশুনো করছেন। কিন্তু কয়েকবছর আগে তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিছুতেই ভুলতে পারেন না তিনি। ওই যুবতী হিউম্যানস অফ বোম্বে-কে দেওয়া একটি ইন্টারভিউতে তিনি বলেন, 'আমার তখন ১৫ বছর বয়স। পড়াশুনোয় আমি ভালো ছিলাম। আমার বাবা দিনমজুর। কিন্তু তবুও কষ্ট করে আমাকে পড়াতেন। একদিন বই আনার জন্য আমি বাড়ি থেকে বাইরে যাই। তখন রাস্তায় একদল ছেলে আমাকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। আমাকে একটা ধান ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে আমি তাঁদের চিনতে পারি। আমাদের গ্রামের উচ্চবর্ণের ছেলে তারা। তিনজন ছিল। আমি ওদের হাতে পায়ে পড়ি। বলি আমি তোমাদের বোনের মতো আমায় ছেড়ে দাও। কিন্তু ওরা আমার কথা শোনে না। গণধর্ষণ করে রেখে যায়।"
এর পর ওই যুবতী আরও জানায়, "আমার যখন চেতনা ফেরে দেখি আমি একা ক্ষেতে তারা কেউ নেই। কোনও মতে বাড়ি ফিরে বাবা মাকে সব জানাই। আমার মা আমায় জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিল। এরপর দিন থানায় অভিযোগ জানাবার জন্য আমরা বাড়ির বাইরে গেলে ওরা এসে আমাদের একটা ভিডিও দেখায়। ধর্ষণের সময় ওরা ভিডিও করেছিল। সেই ভিডিও বাজারে ছেড়ে দেওয়ার। এই ভয়ে আমরা ফের বাড়ি ফিরে আসি। আমার বাবা আত্মহত্যা করে নেয়। তখন আমি নিজেই পুলিশকে সব জানাই। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। গ্রামের মোড়লরা মিটিং করে আমায় ওই তিন জনের মধ্যে একজনকে বিয়ে করে নিতে বলেন। এমনকি পুলিশ বলে এ আর নতুন কি ঘটনা। সে সময় আমি একাই গ্রাম ছেড়ে চলে আসে। এবং কোর্টে কেস করি। আমি নিজে আইন নিয়ে পড়াশুনো করছি। এবং নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছি। প্রতিবার কোর্টে গিয়ে আমাকে গোটা ঘটনার বর্নণা করতে হত। যা আমার কাছে বিভিষিকা। তবে ওই ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। অবশেষে কারাগারের পিছনে ওদের দেখে আমার শান্তি হয়। তাই বলছি কোথায় সব মানুষের সমান অধিকার। সকলে ধরেই নিয়েছে দলিতদের সঙ্গে এমন হয়েই থাকে।"
এই সাক্ষাৎকারটি অফিশিয়াল হিউম্যানস অফ বোম্বে তাঁদের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছে। এই পেজটি থেকে এই রকম নানান ঘটনা তুলে ধরা হয়। যা মানুষকে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। এই পোস্টটি দেখার পর বহু মানুষ ওই যুবতীর সাহসের প্রশংসা করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলেই শেয়ার করছেন এই মেয়ের জীবনের কথা।