এদিকে নিকি ৯ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিবাহিত। ভারতীয় বিচার কোডের এর ধারা ৮০, অর্থাৎ যৌতুকের দাবিতে মৃত্যুর বিধান কেবলমাত্র সেই সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেখানে বিবাহের ৭ বছরের মধ্যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মহিলার মৃত্যু হয় এবং যৌতুকের জন্য হয়রানি প্রমাণিত হয়। এই পরিস্থিতিতে নিকির ক্ষেত্রে সরাসরি ধারা ৮০ প্রয়োগ করা কঠিন বলেই মনে হয়।
advertisement
যৌতুকজনিত মৃত্যুর জন্য ভারতীয় বিচার কোডের ধারা ৮০
এই ধারাটি তনই প্রযোজ্য যখন একজন মহিলা তাঁর বিবাহের সাত বছরের মধ্যে পুড়ে যাওয়া, আঘাত বা স্বাভাবিক পরিস্থিতি ব্যতীত অন্য কোনও কারণে মারা যান এবং এটি দেখানো যায় যে তাঁর মৃত্যুর ঠিক আগে যৌতুকের দাবিতে তাঁকে নিষ্ঠুরতা বা হয়রানির শিকার করা হয়েছিল। এই অপরাধের শাস্তি সর্বনিম্ন সাত বছরের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং জরিমানা।
তাহলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
যদি ভারতীয় বিচার কোডের ধারা ৮০ অর্থাৎ যৌতুকের দাহবিতে হত্যা প্রয়োগ নাও করা হয়, তবুও এর অর্থ এই নয় যে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আইনি ব্যবস্থা থেকে রেহাই পাবেন। যদি তদন্তে প্রমাণিত হয় যে যৌতুকের দাবি বা পারিবারিক হিংসার কারণে নিকিকে ক্রমাগত হয়রানি করা হচ্ছিল, তাহলে ভারতীয় বিচার কোডের ধারা ৮৫ (নিষ্ঠুরতা/নির্যাতন) তাঁদের উপর প্রয়োগ করা যেতে পারে। এছাড়াও, যদি আত্মহত্যার কোনও ঘটনা সামনে আসে এবং নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আইপিসি ৩০৬-ও (আত্মহত্যার প্ররোচনা) প্রয়োগ করা যেতে পারে।
নিকির মৃত্যুর কারণ কী?
নিকি হত্যা মামলায় নতুন মোড় এসেছে। অভিযোগ করা হয়েছিল যে নিকি ভাটিকে তাঁর স্বামী বিপিন যৌতুকের জন্য প্রথমে মারধর করেছিলেন এবং পরে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। যেদিন এই ঘটনাটি ঘটেছিল, অর্থাৎ ২১ অগাস্ট, ২০২৫ তারিখে নিকিকে ফর্টিস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, সেখানে পরিবার বলেছিল যে সিলিন্ডার বিস্ফোরণই আগুন লাগার কারণ। হাসপাতালের রিপোর্টেও একই কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এখন পুলিশ হাসপাতালের ডাক্তারদের কাছ থেকে বিবৃতি নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি
পুলিশ মামলাটির তদন্তের জন্য সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করেছে এবং সমস্ত তথ্য মেলানো হচ্ছে। ফুটেজে দেখা ব্যক্তিটি বিপিন না কি অন্য কেউ তা তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও, হাসপাতালের ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে আরও দেখা গিয়েছে যে হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত মেমোতে আগুন লাগার কারণ সিলিন্ডার বিস্ফোরণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, অভিযুক্তের বাড়ি থেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি, বরং সেখানে জ্বলন্ত পাতলা জিনিস পাওয়া গিয়েছে।