একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এই নির্দেশ জানায় প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণানের ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে নির্দেশিকা গোটা রাজ্যে বাস্তবিক প্রয়োগ এর জন্য কঠোর পদক্ষেপ করতেও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এর আগে গ্রিন ট্রাইবুনাল নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও সেই নির্দেশ সেভাবে কার্যকর হয়নি গোটা রাজ্যে। হাওড়া শিবপুরের আইনজীবী জয়ন্ত সামন্ত জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন ২০১৯ সালে। জনস্বার্থ মামলার নেপথ্যে ছিল মামলাকারীর নিজের পরিবারের এক নিদারুণ অভিজ্ঞতা।
advertisement
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে মা উড়ালপুল ধরে সপরিবারে তিনি যাচ্ছিলেন ইকোপার্ক। উড়ালপুল এর উপর গাড়ির উপরের অংশ খুলে মুখ বাড়িয়ে ছিল তাঁর সন্তান । সেই সময় চিনা মাঞ্জা সুতো গলায় আটকে ক্ষতবিক্ষত হয় সন্তান। রক্ত ঝরে। উড়ালপথ কার্যত তাঁর কাছে হয়ে ওঠে মৃত্যুপথ।
এরপর আরও কিছু ঘুড়ির সুতো পেঁচিয়ে আহত হন অনেকেই। তাই নিজে আইনজীবী হওয়ায়চিনা মাঞ্জা সুতো আটকাতে, শুরু করেন আইনি লড়াই। ২০১৯ সাল থেকে মামলা বিচারাধীন ছিল। সম্প্রতি লকডাউনের সময় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ফ্লাইওভার থেকে পার্কসার্কাসের দিকে নামতে গিয়ে ফের চিনা মাঞ্জা সুতো গলায় আটকে প্রাণ হারান খিদিরপুরের যুবক
তোপসিয়া, বেনিয়াপুকুর, তিলজলা, প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ে চিনা মাঞ্জা সুতো নিয়ে। পুলিশ মাইকিংও করে চিনা মাঞ্জাসুতো দুর্ঘটনা আটকাতে। তবে কিছুদিন যেতেই আবার যে কে সেই।
বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের নজরে এনে দ্রুত বিষয়টির নিষ্পত্তি চান আবেদনকারী। মামলায় রাজ্যের যুক্তি ছিল, ২৫ মার্চ পরিবেশ দপ্তর চিনা মাঞ্জা নিষিদ্ধ বলে নির্দেশিকা জারি করেছে। তবে প্রাণঘাতী সুতো মরণফাঁদ বন্ধ করতে মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা জারি করে হাইকোর্ট। জনস্বার্থ মামলাকারী আইনজীবী জয়ন্ত সামন্ত জানান, "দীর্ঘ লড়াইয়ের পর চিনা মাঞ্জা নিষিদ্ধ হওয়ায় ভালো লাগছে। নিষেধাজ্ঞা প্রচারের ওপরও জোর দিতে বলেছে হাইকোর্ট। মা উড়ালপুলের সেদিনের ঘটনা এখনও ভুলতে পারি না।"