সূত্রের খবর, পুরনো নেতাদের দলে গুরুত্ব বাড়াতে মোদি-শাহরা নতুন পরিকল্পনা নিয়েছেন। বাংলায় তো বটেই সমস্ত রাজ্যেই বিজেপির প্রবীণ ও পুরনো নেতা-কর্মীদের নিয়ে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করবেন স্থানীয় নেতারা। বাংলার ২৯৪ টি বিধানসভাকে টার্গেট করে এ ব্যাপারে ‘ভোজ সম্মেলন’ এর বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে রাজ্য বিজেপির তরফেও।
advertisement
এই কর্মসূচি অনুযায়ী, সম্মেলনের আয়োজন করে শুনতে হবে দলের আদিদের পরামর্শ। কর্ণাটক ভোটে হারের শিক্ষা থেকেই এই পরিকল্পনা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে দিল্লি নেতৃত্বের নির্দেশে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, তারআগেই তো বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন, তাই এ রাজ্যে বিশেষভাবে দলীয় কর্মসূচি কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর।
কারণ, বঙ্গ বিজেপিতে ইতিমধ্যেই আদি-নব্য দ্বন্দ্ব তীব্র আকার নিয়েছে বলেই মত দলের একাংশের। লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে ৩৫ টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন অমিত শাহ। কিন্তু চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপির সেই আদি নব্য দ্বন্দ্বই কেন্দ্রীয় নেতত্বের চিন্তার কারণ। উল্লেখ্য, বঙ্গ বিজেপির অন্দরেই আওয়াজ উঠেছে, ‘দলবদলু নতুনদের নিয়ে মাতামাতি নয়, পুরনোদের গুরুত্ব দিতে হবে’।
এই সমস্ত সমস্যা মেটাতে তাই মোদি সরকারের ন’বছর পূর্তি কর্মসূচিকে সামনে রেখে তাই বিধানসভা স্তরে এই বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সম্প্রতি সাংগঠনিক বৈঠকে দলীয় নির্দেশিকার কথা উল্লেখ করে সেখানে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, ‘‘জনসংঘের সময় থেকে বিজেপি পার্টি তৈরি হওয়ার পর থেকে যে যে পুরনো ও প্রবীণ কার্যকর্তারা রয়েছেন, তাদের তালিকা বানাতে হবে। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।’’
সূত্রের খবর, পুরনো নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশকে যদি পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের আগে নামানো না যায় তাহলে বিজেপির ভাল ফল হওয়া সম্ভব নয়। এমনটা বিভিন্ন জেলা থেকে দলীয় রিপোর্টও উঠে এসেছে। আদিরা দূরে সরে থাকায় তার প্রভাব পঞ্চায়েত ভোটেও পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে চিন্তায় রয়েছে বিজেপি। দলের পুরনোদের প্রাধান্য না দেওয়াটাও কর্ণাটকে হারের পিছনে অন্যতম কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। রাজনৈতিক মহলের মতে, একবছরে মধ্যে আরও চারটি রাজ্যে বিধানসভা ভোট ও লোকসভা ভোট রয়েছে। তার আগে কর্ণাটকের হার মোদি—শাহদের কাছে অশনি সংকেত। তাই মোদি সরকারের ন’বছর পূর্তিকে সামনে রেখে সারা দেশজুড়ে সংগঠনের পালে হাওয়া তুলতে ও জনসংযোগ বাড়াতে দলের মন্ত্রী থেকে সাংসদ—বিধায়ক ও রাজ্য নেতাদের ইতিমধ্যেই মাঠে নামিয়েছে পদ্ম ব্রিগেড। আর বাংলায় যেহেতু লোকসভা ভোটের আগে পঞ্চায়েত ভোট তাই চলতি মাসের প্রথম থেকে বাংলায় রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রীরাও মোদি সরকারের নয় বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছেন। তবে এতে রাজনৈতিক ভাবে কতোটা সুফল মেলে পদ্ম শিবিরের তার উত্তর দেবে সময়ই।
ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী