গোধরায় বিলকিস বানোর অপরাধীদের আগাম মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে অবিলম্বে, ছ’হাজার মানুষের স্বাক্ষর সম্বলিত এক যৌথ বিবৃতিতে এমনটাই দাবি জানানো হয়েছে৷ বিবৃতিতে বলা হয়েছে ১১ জন দোষীর মুক্তির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক এবং পুনরায় কারাগারেই পাঠানো হোক তাদের৷
ধর্ষকরা মুক্তি পেয়ে ফিরেছে সমাজে। এই ঘটনায় ভারতের বিচারব্যবস্থার প্রতি বিশ্বাস নড়ে গিয়েছে বিলকিস বানোর। ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার সময় বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ এবং তাঁর পরিবারের সাত সদস্যকে হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১১ জন মুক্তি পাওয়ার পর নিজের প্রথম বিবৃতিতে বিলকিস বুধবার বলেন, এই পদক্ষেপ “ন্যায়বিচারের প্রতি আমার বিশ্বাসকে নাড়িয়ে দিয়েছে।” “দুই দিন আগে, ২০২২ সালের ১৫ অগাস্ট, বিগত ২০ বছরের ট্রমা আমাকে আবার বিপর্যস্ত করে দিয়ে গেল। আমি শুনলাম যে ১১ জন দোষী ব্যক্তি, যারা আমার পরিবার এবং আমার জীবন ধ্বংস করেছে এবং আমার ৩ বছরের মেয়েকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে, তারা মুক্তি পেয়ে গেল,” বলেন বিলকিস।
advertisement
আরও পড়ুন: বৈদিক ভিলেজে বঙ্গ বিজেপির পাঠশালা, শিক্ষা দিতে আসছেন 'মাস্টারমশাই'!
“আমি হতবাক ছিলাম। আমি এখনও স্তব্ধ। আজ আমি শুধু এইটুকুই বলতে পারি, কোনও নারীর বিচার এভাবে শেষ হয় কী করে? আমি আমাদের দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে বিশ্বাস করতাম। আমি রাষ্ট্রের ওপর আস্থা রেখেছিলাম, এবং আমি ধীরে ধীরে আমার ট্রমা নিয়ে বাঁচতে শিখছিলাম,” বলেন বিলকিস বানো।
আরও পড়ুন: বৈদিক ভিলেজে বঙ্গ বিজেপির পাঠশালা, শিক্ষা দিতে আসছেন 'মাস্টারমশাই'!
বিলকিস বানো বলেন, “এই আসামীদের মুক্তি আমার কাছ থেকে আমার শান্তি কেড়ে নিয়েছে এবং ন্যায়বিচারের প্রতি আমার বিশ্বাসকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আমার দুঃখ এবং আমার ভেঙে যাওয়া বিশ্বাস শুধু আমার একার নয়, প্রতিটি মহিলার যারা আদালতে ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রাম করছেন,” বলেন বিলকিস বানো।
২০০২ সালে গোধরা-পরবর্তী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় বারিয়া গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানো-সহ তাঁর মা-বোন ও পরিবারের বাকি সাত সদস্যকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে নৃশংসভাবে মারে হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। অভিযোগ ওঠে, এলাকার পুলিশ কর্মকর্তারা প্রমাণের অভাবে বিলকিসের মামলা নথিভুক্ত করতে অস্বীকার করে৷ বিলকিস তারপরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে যান৷ ২০০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন। সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে পরিস্থিতি তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। সেই অভিযুক্তদেরই একজন মুক্তির আবেদন করে৷ সোমবার মুক্তি পায় ১১ জন বন্দি৷