উচ্চশিক্ষিত প্রবীণ ভোলানাথের ইচ্ছে ছিল, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার পর তাঁর নিথর দেহের পাশে থাকবে প্রয়াত স্ত্রীর চিতাভস্ম। তাঁর বিশ্বাস ছিল, এভাবেই মৃত্যুতেও তাঁদের প্রেম চিরশাশ্বত হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন : শরীরে একাধিক ফ্র্যাকচার নিয়ে শয্যাশায়ী কনে, হাসপাতালে এসে বিয়ে করলেন বর
তাঁর শেষ ইচ্ছে পূর্ণ হয়েছে। গত বছর ২৪ জুন প্রয়াত হন ভোলানাথ। এর পর তাঁর জামাই অশোক সিং বৃদ্ধের সেই ইচ্ছে পূর্ণ করেন। ইচ্ছের জন্ম আরও তিন দশক আগে। ১৯৯০ সালের ২৫ মে প্রয়াত হন ভোলানাথের স্ত্রী পদ্মরানি। তার পর ৩২ বছর ধরে প্রয়াত স্ত্রীর চিতাভস্ম সাজিয়ে রেখেছিলেন ভোলানাথ।
advertisement
সিপাহি টোলায় তাঁর বাড়ির ঠিক পাশে একটি আমগাছে। তাঁর কাছে সেটি ছিল ভালবাসা ও প্রেমের প্রতীক। গাছের ডালে ঝোলানো ছিল চিতাভস্ম। রোজ সেখানে এসে একটি গোলাপ নিবেদন। তার পর নতজানু হয়ে প্রেম নিবেদন ও স্ত্রীকে স্মরণ করতেন ভোলানাথ। জ্বেলে দিতেন ধূপকাঠি।
ভোলানাথের জামাই মনে করেন তাঁর প্রয়াত শ্বশুরমশাই পরবর্তী প্রজন্মের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর কথায়, "আমার শ্বশুরমশাইয়ের তাঁর স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা ও নিবেদন শেখায় প্রকৃত প্রেম কাকে বলে।’’ এই প্রেমকাহিনি শেষ হয়ে যাক, চায় না পরবর্তী প্রজন্ম। তাই যেখানে ভোলানাথের স্ত্রীর চিতাভস্ম ছিল, সেখানে তাঁর নিজের চিতাভস্মও মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রেমের ধারাকে প্রবহমান রাখতে চায় নতুন প্রজন্ম। বাড়ি থেকে কোনও কাজে বেরনোর সময় এবং বাড়িতে প্রবেশের সময় ওই চিতাভস্মের আধারকে প্রণাম করে উত্তরসূরিরা।
প্রেমের পথ চলা যেন শেষ না হয়...